শাকিল আহম্মেদ (বগুড়া) স্টাফ রিপোর্টার:বগুড়ার সোনাতলা উপজেলায় শ্বশুর বাড়িতে ফয়জুল্লাহ আকন্দ (৬০) নামের এক ব্যক্তির খুন হয়েছে। তাঁর গলা ব্লেড দিয়ে সামান্য কাটা ছিল। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী আমেনা বেগম (৫০) ও আমেনা বেগমের বড় ভাই দুলুর স্ত্রী আনু বেগমকে (৪০) আটক করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার রাতে সোনাতলা উপজেলার শিহিপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এবিষয়ে নিহতের বড় ছেলে আমিনুল ইসলাম বাঁদী হয়ে মা ও মামীকে আসামী করে সোনাতলা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। নিহত ফয়জুল্লাহ আকন্দ সোনাতলা উপজেলার মধ্যে দিঘলকান্দি গ্রামের মৃত সমসের আকন্দের ছেলে। তিনি কৃষিকাজ করতেন।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ফয়জুল্লাহ পরিবারের ২০/২৫ দিন পূর্বে ঝগড়া বিবাদ হয়। এঘটনায় আমেনা বেগম স্বামীর বাড়ি থেকে রাগ করে ভাইয়ের বাড়িতে যায়। ফয়জুল্লাহ একাধিক বার তাঁকে আনতে ব্যর্থ হয়। ঘটনার দিন নিহতের বড় ছেলে ঢাকায় থেকে এসে তার মাকে আনতে যায়। ছেলেও তাকে আনতে ব্যর্থ হয়। এক পর্যায়ে সন্ধ্যায় ফয়জুল্লাহ আবারো স্ত্রী আমেনাকে আনতে যায়। আমেনা আসতে না চাইলে তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। এক পর্যায়ে ফয়জুল্লাহ মাটিতে পড়ে মারা যাওয়ার পর ব্লেড দিয়ে গলায় সামান্য কেটে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে বলে স্বজনরা জানান। এরপর আমেনা ভ্যানযোগে গাবতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উদ্দেশ্য নিয়ে যায় পথিমধ্যে তিনি মারা যান বলে পরিবারের লোকজন জানান।
এদিকে নিহতের ভাতিজা জিয়াউল বলেন, চাচী ও চাচির ভাই-ভাবি মিলে আমার চাচাকে মেরে ফেলে ব্লেড দিয়ে কেটে দিয়েছে। পরে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়েছে তারা।
ওসি বাবু কুমার সাহা বলেন, আটককৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায় ফয়জুল্লাহ আকন্দের স্ত্রী আমেনা বেগম ছেলের বউয়ের সঙ্গে ঝগড়া করে কয়েক দিন আগে বাবার বাড়ি শিহিপুর গ্রামে চলে আসেন। শনিবার সন্ধ্যায় ফয়জুল্লাহ আকন্দ স্ত্রীকে বাড়িতে আনার জন্য শিহিপুর গ্রামে শ্বশুর বাড়িতে যায়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বাড়ি ফেরা নিয়ে ফয়জুল্লাহর সঙ্গে স্ত্রী আমেনা বেগম ও আমেনা বেগমের ভাইয়ের স্ত্রী আনু বেগমের ধস্তাধস্তি হয়। এতে ফয়জুল্লাহ মাটিতে পড়ে মারা যান। এ সময় বাড়িতে পুরুষ মানুষ না থাকায় ভয় পেয়ে যান আমেনা বেগম ও আনু বেগম। তারা দু’জন পরামর্শ করে মৃত্যুর ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে চালানোর জন্য ব্লেড দিয়ে ফয়জুল্লাহের গলায় সামান্য কেটে দেন। খবর পেয়ে পুলিশ রাতেই ফয়জুল্লাহের লাশ হেফাজতে নেয় এবং আমেনা বেগম ও আনু বেগমকে আটক করে।
এঘটনায় নিহতের ছেলে আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।