সোহেল রানা চৌহালী প্রতিনিধি:
সিরাজগঞ্জের এনায়েপুরে গ্রামের বেতিল বাজারে প্রায় পঞ্চান্ন বছর ধরে ফুটপাতে পিঁড়িতে বসে চুল বা ( নর সুন্দরের) কাজ করছেন চৌহালী উপজেলার খামার গ্রামের বাসিন্দা দুই ভাই প্রতিবন্ধী সুকুমার শীল(৭৫) ও সুভাস শীল (৬৫) তাদের দুজনেরি বয়স কতই বা হবে এই তো বাংলাদেশর সমান।
পঞ্চান্ন বছর আগে বেতিল বাজারে স্থায়ী কোনো দোকানপাট না থাকায় সপ্তাহে দুই দিন শনিবার ও মঙ্গলবার কয়েকজন ব্যবসায়ী পসরা সাজিয়ে জিনিসপত্র বিক্রি করতেন। তখন থেকে পিঁড়িতে বসে চুল ও দাঁড়ি কাটার কাজ করছেন দুই আপন ভাই। চুল কাটার জন্য তখন কার সময় হাদিয়া দিতে হতো ৫ পয়সা এবং দাঁড়ি কাটার জন্য ৩ পয়সা।
এটাকা দিয়েই জীবিকা নির্বাহ করতো তারা।
সময়ের পরিবর্তন কালে এখন চুল কাটার দর ২০ টাকা এবং দাঁড়ি কাটার দর ১৫ টাকা। এখন প্রতিদিন ১৫০ থেকে ২০০ টাকা আয় হয় তাদের।
পঞ্চান্ন বছর অতিবাহিত হওয়ার পর বাজারের চিত্র বদলে গেলেও বদলায়নি দুই ভাই। একইভাবে সেই আগের মতই কাজ করে যাচ্ছে।
এই বাজারটি প্রায় ২০ বছর ধরে বড় হয়েছে। এখন সপ্তাহে দুদিন নয়, বরং ৭ দিনই সকাল ৯টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত ক্রেতাদের ভিড়ে মুখরিত থাকে। প্রতিবন্ধী সুকুমার ও তার ভাই সুভাস বিকেলে ৫ টার পর কাজে আর থাকেনা।
প্রতিবন্ধী শুকুমার শীলের সংসারে তিন ছেলে এক মেয়ে রয়েছে। তিন ছেলে তার পেশায় রয়েছেন। আর মেয়েটির বিয়ে দিয়েছেন। তবে তার ছেলেরা মাটিতে নয়, সেলুনে কাজ করেন।
সুভাশ শীলের তিন মেয়ে এক ছেলে রয়েছে। মেয়ে তিনটি বিয়ে দিয়েছেন এবং তার এক ছেলে তার পেশায় রয়েছেন, তার ছেলেটিও সেলুনে কাজ করে।
আর তারা দুই ভাই যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সেলুনে চুল কাটার কাজ করার কোন ইচ্ছা আছে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে তারা দুই ভাই বলেন, পিঁড়িতে বসে কাজ করে অভ্যস্ত হয়ে গেছে আমাদের । এখন চাইলেও আর সম্ভব না। জীবনের বাকি দিনগুলো যে কয়দিন বেঁচে থাকি, এভাবেই কাজ করে জীবনে ইতি টানতে চাই আমরা এই সহোদর।
বেতিল বাজারের সেলুন ব্যাবসায়ী শ্যাম সুন্দর জানান, চৌহালী উপজেলার সদিয়া ইউনিয়নের মধ্যে তারা দুই ভাই বয়স্ক (শীল) তারা দীর্ঘদিন যাবত স্বল্প মূল্যে পিঁড়িতে বসে চুল ও দাড়ি কেটে আসছেন এই বাজারে।
