মোঃ আমিরুল হক, রাজবাড়ী :রাজবাড়ীর পাংশা মডেল থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ২টি ওয়ান শুটারগান, ৪টি তাজা কার্তুজ ও ৬টি ককটেল বিস্ফোরক উদ্ধারসহ ২ জন সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করেছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, পাংশা উপজেলার কুঠিমালিয়াট পশ্চিমপাড়ার মৃত কাদের মন্ডলের ছেলে মোঃ কফিল উদ্দিন ওরফে কইফে (২৭), একই গ্রামের মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিকের ছেলে শাওন (২২)।
সোমবার দুপুরে রাজবাড়ী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে প্রেস ব্রিফিং করেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) মোঃ রেজাউল করিম।
তিনি বলেন, পাংশার চাঞ্চল্যকর দুবাই প্রবাসীর স্ত্রী রোজিনা ওরফে আরজিনা (৩০) হত্যা মামলায় মোঃ শিহাব শেখ (৪৫) নামে এক আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ সুপার জি.এম. আবুল কালাম আজাদের সার্বিক দিকনির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এ্যান্ড অপস্) মুকিত সরকারের সার্বিক তত্ত্বাবধানে পাংশা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ স্বপন কুমার মজুমদারের নেতৃত্বে এসআই তারিকুল ইসলাম সঙ্গীয় অফিসার ফোর্সসহ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রবিবার রাত ১১টার সময় অভিযান পরিচালনা করা হয়। পাংশা উপজেলার কুঠিমালিয়াট গ্রামের নাছিমা বেগমের বাড়ীতে অভিযান পরিচালনা করে আসামী মোঃ কফিল উদ্দিন ওরফে কইফে ও শাওনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় আসামী তুষার বিশ্বাস (৪২) কৌশলে দৌড়ে পালিয়ে যায়।
তিনি বলেন, ধৃত আসামীদেরকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তারা উপস্থিত স্থানীয় লোকজনের সামনে স্বীকার করে যে, আসামী মোঃ কফিল উদ্দিন ওরফে কইফের সাথে পূর্ব শত্রুতার কারণে মোঃ আলাল হোসেন (৪১) কে এবং আসামী শাওন ও তার পরিবারের সাথে জমি জমা সংক্রান্ত বিরোধের কারণে মোঃ মনিরুল ইসলাম (৪০) কে তারা হত্যা করার পরিকল্পনা করছিল। আসামী মোঃ কফিল উদ্দিন ওরফে কইফে জানায় যে, আলাল ও মনিরুল ইসলামকে হত্যা করার কাজে ব্যবহারের জন্য পলাতক আসামী তুষার অস্ত্র-গুলি ও গুলি করার পর ভীতি সৃষ্টি করার জন্য ককটেল বোমা একটি বাজারের ব্যাগে ভরে তার কাছে দিয়েছেন। সেই অস্ত্র-গুলি ও ককটেল ভর্তি ব্যাগটি তার (মোঃ কফিল উদ্দিন ওরফে কইফে) খালা নাছিমা বেগমের পরিত্যাক্ত টিনের ঘরের ভিতর রেখেছে এবং অস্ত্র-গুলি ও ককটেল রাখার বিষয়টি আসামী শাওন জানতো। তখন স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতিতে আসামী মোঃ কফিল উদ্দিন ওরফে কইফেকে নিয়ে নাছিমা বেগমের বাড়ীর টিনের পরিত্যক্ত ঘরে পাশের কক্ষে থাকা সাব বাক্সের পাশ থেকে অস্ত্র, গুলি ও ককটেল ভরা একটি ব্যাগ নিজ হাতে বের করে দেয়। ওই ব্যাগে লোহা ও কাঠের বাট যুক্ত একটি দেশীয় তৈরী ওয়ান শুটারগান, একটি লোহার তৈরী দেশীয় ওয়ান শুটারগান, বেল্টযুক্ত ভিভো লেখা কালো রংয়ের একটি সাইড ব্যাগের ভিতর থাকা চারটি তাজা কার্তুজ, পেষ্ট রংয়ের একটি শপিং ব্যাগে থাকা কালো রংয়ের কসটেপ দ্বারা পেচানো ছয়টি অবিস্ফোরিত ককটেল বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, এ ব্যাপারে পাংশা মডেল থানায় সোমবার অস্ত্র ও বিস্ফোরণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
তিনি বলেন, কয়েকটি সন্ত্রাসী চক্র ভারতে বসে চুক্তিতে হত্যা, চাঁদাবাজি, মারধর সহ নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছে। চুক্তিতে গৃহবধু রোজিনা ওরফে আরজিনা হত্যার ক্লু উদ্ধার করতে গিয়ে বেরিয়ে আসছে এ চক্রের হোতা সহ গ্রুপ। পুলিশ এদের গ্রেপ্তারে মাঠে নেমেছে।
প্রেস ব্রিফিংকালে সহকারী পুলিশ সুপার (পাংশা সার্কেল) সুমন কুমার সাহা, পাংশা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ স্বপন কুমার মজুমদার, এসআই তারিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।