শনিবার, ১৭ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৯শে জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি
শনিবার, ১৭ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৯শে জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

বালিয়াকান্দিতে পুকুরে বিষ প্রয়োগে মাছ মারার ভিত্তিহীন অভিযোগ দাবি এলাকাবাসীর

বালিয়াকান্দি (রাজবাড়ী) প্রতিনিধিঃ

সম্প্রতি রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার একটি পুকুরে বিষ প্রয়োগ মাছ নিধনের অভিযোগ করেছিলেন পুকুর মালিক। যার প্রেক্ষিতে বেশ কয়েকটি পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। এই দাবী কে ভিত্তিহীন বলে প্রকাশ করেছেন ওই এলাকার একাধিক এলাকাবাসী।

পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে ১০ মন মাছ নিধনের ভিত্তিহীন অভিযোগ দিয়ে এক প্রতিবেশীকে ঘায়েল করার চেষ্টা। দাবী এলাকাবাসীর ঘটনাটি ঘটেছে গত ২৩ মে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের ইকরজোনা গ্রামে।

সরেজমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে কথা হয় এলাকাবাসীদের সঙ্গে। এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায় , পুকুর মালিক আব্দুল কাদের মন্ডল এবং প্রতিবেশী স্থানীয় ইকরজোনা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন প্রমাণিকের আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে জমা জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ চলে আসছে। সে থেকেই পুকুর মালিক আব্দুল কাদের মন্ডল প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য বিভিন্ন সময়ে কুমতলব আটতে থাকে। ইতিপূর্বে প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিনের বাড়ির নিকট থেকে আব্দুল কাদের মন্ডল জোরপূর্বক একটি মেহগনি গাছ কর্তন করে এবং এলাকাবাসীর প্রতিরোধের মুখে সে গাছটি নিতে পারেননি। সে ঘটনাকে কেন্দ্র করেই আব্দুল কাদের মন্ডল বিষ প্রয়োগে মাছ নিধানের মিথ্যা অভিযোগ তোলেন বলে এলাকাবাসীর দাবী। মাছ নিধন বিষয়ে এলাকাবাসীর নিকট জানতে চাইলে তাঁরা জানান, ,কিছু সিলভার কার্প জাতীয় মাছ মারা গেছে এটা সত্য, তবে বিষ প্রয়োগে মারা যায়নি। পুকুর গুলোতে পানি কমে যাওয়ায় প্রচন্ড গরমের কারনে পানি গরম হয়ে আশ পাশের অনেক পুকুরে মাছ মারা গেছে। আর ১০ মণ মাছ মারা গেছে এটা সত্য নয়। এলাকাবাসী আরো জানান, আব্দুল কাদের মন্ডল পার্শ্ববর্তী ডোবার পানি শুকিয়ে যাওয়ার কারনে সেখান থেকে ১০ থেকে ১৫ কেজি সিলভার কাপ এবং রুই জাতীয় মাছ পোনা ধরে তার অন্য পুকুরে অবমুক্ত করেন। পুকুরে ২ থেকে ৩ ফুট পানি ছিলো যার কারণে প্রচন্ড দাবদাহের কারণে মাছ মারা যেতে পারে। পুকুর পাড়ে বিষের খালী ৩ বোতল পাওয়া গেছে প্রশ্নের জবাবে তাঁরা জানান, মাছ মরার খবর শুনে আমরা১০/১২ জন এলাকাবাসী জুমার নামাজের পর পুকুর পাড়ে যাই।

সেখানে দেখতে পাই পুকুরের পানিতে কিছু ছোট আকারের সিলভার কার্প মরে ভেসে আছে, কিন্তু সেখানে কোন বিষের বোতল দেখতে পাইনি। মাছ নিধনের বিষয়ে পুকুর মালিক কাদের মন্ডলের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তাকে পাওয়া যায়নি তবে তার স্ত্রীকে পাওয়া গেলে তিনি বলেন, আমার স্বামী ঘটনার আগের দিন পাশ্ববর্তী একটি ডোবার পানি শুকিয়ে যাওয়ায় সেখানে থাকা ১০/১৫ কেজি মাছের পোনা ধরে আমাদের পুকুরে অবমুক্ত করেন তখন পুকুরের পানি কিছুটা গরম ছিলো। বিষ প্রয়োগে মাছের পোনা নিধন করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে কাদের মন্ডলের স্ত্রী জানান, শুক্রবার সকালে লোকজন এসে আমাদেরকে জানান, যে তোমাদের পুকুরের মাছ মরে ভেসে উঠেছে। সঙ্গে সঙ্গে গিয়ে দেখি কিছু মাছ মারা গেছে। আর মরা মাছ কিছুটা বাড়িতে এনে খাওয়ার জন্য রান্না করি, তবে রান্না করা মাছ দুর্গন্ধের কারনে আমরা কেউ খেতে পারিনি। কাউকে বিষ প্রয়োগ করতে দেখেছেন কিনা? প্রশ্নের জবাবে বলেন কাউকে বিষপ্রয়োগ করতে কেউ দেখেনি।
কি কারনে মাছ মারা গেল জানতে চাইলে বলেন মিথ্যা বলবো না কাওকে বিষ দিতে দেখিনি ,উপর আল্লাহ জানেন কি কারণে মাছ মারা গেল। বিষয়টি নিয়ে দুই পক্ষই নিরেপেক্ষ তদন্তের দাবী জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে ওই ওয়ার্ডের সদস্য মিজানুর রহমান মিজান বলেন, আমিও লোকোমুখি শুনেছি এই বিষ প্রয়োগের কথা। এলাকায় এসে অনেকের সঙ্গে কথা বলেই জানতে পারি বিষয়টি ভিত্তিহীন। তবে কয়েকদিনের অতিরিক্ত গরমের কারণে পানিতে গ্যাস হয়ে মাছ মারা যেতে পারে বলে আমার ধারণা।

সম্পর্কিত