বুধবার, ১০ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৫শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৯শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি
বুধবার, ১০ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৫শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৯শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

বাগাতিপাড়ায় অবরুদ্ধ প্রধান শিক্ষক ও সভাপতিকে উদ্ধার করলেন ইউএনও!

 

বাগাতিপাড়া (নাটোর) প্রতিনিধিঃ

নাটোরের বাগাতিপাড়ায় অফিস কক্ষে তালা লাগিয়ে একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কমিটির সভাপতি কে প্রায় এক ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন অভিভাবকরা। বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার সদর ইউনিয়নের জিগরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লোকমান হোসেন ও স্কুল কমিটির সভাপতি মোঃ আমিরুল ইসলাম টারজানকে অবরুদ্ধ করা হয়। পরে এক ঘন্টা পর ইউএনও এসে তাকে অবরুদ্ধ থেকে মুক্ত করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই বিদ্যালয়ে এবছরই হঠাৎ করে ষষ্ঠ শ্রেণীতে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য লটারি করা হয়। কিন্তু এটি একটি প্রত্যন্ত গ্রাম এলাকা। বিদ্যালয়ের আশেপাশের ১২৩ জন শিক্ষার্থী ভর্তি ফর্ম উত্তোলন করেন। লটারি করে মাত্র ৫৫ জনকে ভর্তির জন্য নির্বাচন করা হয়। আর বাঁকি ৬৮ জন এই বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবে না বলে জানায় প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি। এ সময় ভর্তির সুযোগ না পাওয়া শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ হয়ে প্রধান শিক্ষককে তার অফিস কক্ষে অবরুদ্ধ করে অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেন। খবর পেয়ে প্রায় এক ঘন্টা পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাইমেনা শারমীন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক ঘটনাস্থলে এসে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি কে অবরুদ্ধ থেকে মুক্ত করেন। পরে বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে অভিভাবক, বিদ্যালয় কমিটি, শিক্ষক মন্ডলী এবং স্থানীয় ব্যক্তিদের নিয়ে আলোচনা করে আপাতত ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন ইউএনও মোহাইমেনা শারমীন। এ সময় তিনি বলেন, উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অভিভাবক ময়েজ উদ্দিন বলেন, বাড়ির আশেপাশে একটি মাত্র উচ্চ বিদ্যালয় এটি। তার ছেলেকে ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি করার জন্য ফর্ম তুলেছিলেন। কিন্তু ৫৫ জন ভর্তির নিয়মের বেড়াজালে তার ছেলে বাদ পড়েছে। ছোট এই বাচ্চাকে দুরের কোন বিদ্যালয়ে ভর্তি করা একেবারেই অসম্ভব। তাই দ্রুত ভর্তির এই নিয়ম বাতিলের আবেদন তার।

আরেক অভিভাবক মজিদা খাতুন বলেন, তার ছেলেকে এই বিদ্যালয় ছাড়া অন্য কোন স্থানে ভর্তি করা সম্ভব না। অন্য বিদ্যালয় গুলো অনেক দূরে। তাই এই নিয়ম মানা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। ভর্তির এই নিয়ম বাতিল করতেই হবে বলে জোর দাবি জানান তিনি।

জিগরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লোকমান হোসেন বলেন, মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের চিঠি এবং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশনা অনুযায়ী লটারি করা হয়েছিল। তারপর একটি অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

এ সময় সকলের উদ্দেশ্যে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এই বছর সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তির একটি নীতিমালা দেওয়া হয়েছে। সেখানে প্রতিটি বিদ্যালয় একটি শাখায় ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে ৫৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারবেন এবং ষষ্ঠ শ্রেণীতেই শিক্ষার্থীদের রেজিষ্ট্রেশন হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাইমেনা শারমীন বলেন, আপাতত ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। প্রধান শিক্ষক, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ আমরা সকালেই বিষয়টি নিয়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

সম্পর্কিত