মোঃ মকবুলার রহমান,স্টাফ রিপোর্টার নীলফামারী:
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী পুলিশ কর্মকর্তাদের রাজনৈতিক প্রভাব থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুলিশের ভূমিকা হতে হবে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ ও পেশাদারিত্বভিত্তিক, যাতে জনগণের প্রত্যাশা পূর্ণ হয়। দি ডেইলি স্টার বাংলা সুত্রে এমনটি জানা গেছে ।
রোববার রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইন মিলনায়তনে পুলিশের নির্বাচনী প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি অতীতের ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনের অভিজ্ঞতা ভুলে গিয়ে আসন্ন ফেব্রুয়ারির নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। পুলিশের উদ্দেশে তিনি বলেন, “রাজনৈতিক দলের কাছে তোষামোদী করলে নির্বাচনের পর তার কোনো মূল্য থাকে না। তাই জনগণের আস্থা অর্জন করাই আপনাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত।”
উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, সুষ্ঠু নির্বাচন কেবল আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর নির্ভর করে না। এতে জনগণ, রাজনৈতিক দল, নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন—সব স্টেকহোল্ডারের সম্মিলিত ভূমিকা প্রয়োজন। তবে পুলিশের পেশাদারিত্ব ও নিরপেক্ষতা নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিশ্চিত করতে বড় ভূমিকা রাখবে।
তিনি জানান, প্রায় দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে এই প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হবে, যাতে তাদের দক্ষতা, দায়িত্ববোধ ও মনোবল বৃদ্ধি পায়। পাশাপাশি তিনি বলেন, পুলিশের রিক্রুটমেন্ট সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন হয়েছে এবং নির্বাচনের আগে কর্মকর্তাদের পোস্টিং লটারির মাধ্যমে দেওয়া হবে।
মাদক, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা দমনে পুলিশের সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দিয়ে জাহাঙ্গীর আলম বিশেষভাবে দুর্গাপূজা উপলক্ষে আইন-শৃঙ্খলা জোরদারের ওপর জোর দেন।
আন্তর্জাতিক উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকা (১৯৯৪) এবং আয়ারল্যান্ডের অভিজ্ঞতা প্রমাণ করেছে যে পুলিশের নিরপেক্ষ ভূমিকা গণতান্ত্রিক রূপান্তরকে সুসংহত করতে সহায়তা করে। বাংলাদেশ পুলিশকেও সে মানদণ্ডে পৌঁছাতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও স্মরণ করিয়ে দেন, অল্প কিছু বিচ্যুতি পুরো বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে পারে। তাই স্বচ্ছতা ও সততা বজায় রেখে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান তিনি।
তার আশা, বাংলাদেশ পুলিশ আসন্ন নির্বাচনে নিরপেক্ষতা, শৃঙ্খলা ও সততার মাধ্যমে ইতিহাসে সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করবে।