শুক্রবার, ৩১শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৯ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
শুক্রবার, ৩১শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৯ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

রৌমারীতে মন্দিরের আধিপত্য নিয়ে সনাতন ধর্মের দু’পক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ

রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের রৌমারীতে মন্দিরের আধিপত্য ও চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতায় নিহতদের স্মরণে রাষ্ট্রীয় শোক বিশেষ প্রার্থণাকে কেন্দ্র করে সনাতন সম্প্রদায়ের দু’পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষে অন্তত ৯জন আহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) দুপুরে উপজেলার রৌমারী বাজার সার্বজনীন কালিমন্দিরে। সংঘর্ষের কারণে রাষ্ট্রীয় শোক বিশেষ প্রার্থণা পালন করতে পারেনি বলে জানা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী  ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৩২০ বঙ্গাব্দে রৌমারী বাজার সার্বজনীন কালিমন্দির স্থাপিত হয়। এ মন্দিরের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি সনাতন সম্প্রদায়ের দুটি গ্রুপের সৃষ্টি হয়। একটি পক্ষের নেতৃত্ব দেন প্রদীপ কুমার সাহা অপর পক্ষের নেতৃত্ব দেন গৌতম দাস।

এনিয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে পক্ষে বিপক্ষে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনার দিন মন্দিরটি তালাবদ্ধ ছিল। তাই চাবি চাওয়াকে কেন্দ্র করে দু’গ্রুপের মধ্যে বাগবিতন্ডার এক পযার্য়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে উভয় পক্ষের ৯জন আহত হয়। সহযোগীরা তাদেরকে উদ্ধার করে রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। আহতরা হলেন, গৌতম দাস, আকাশ দাস, বিপ্রদাস অপর পক্ষের পরেশ সাহা, নরেশ সাহা, আশিশ সাহা, মিন্টু  , অনিক সাহা ও সবুজ সাহা।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ঘটনার পর থেকে উভয় পক্ষের মাঝে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ফলে মন্দির এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে গৌতম দাস অভিযোগ করে জানান, আমাদের মন্দিরটিকে প্রদীপ কুমার সাহা দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার করে আসছিল। এছাড়া মন্দিরের স্বার্থ ও সার্বিক উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে সঠিকভাবে পালন করেন না। এনিয়ে আমরা প্রতিবাদ করলে তারা আমাদের উপর চড়াও হন ও মারার হুমকি দেন। মঙ্গলবার তারা আমাদের উপর অতর্কিত ভাবে হামলা চালায়।

অভিযোগ ব্যাপারে প্রদীপ কুমার সাহা জানান, আমি দীর্ঘদিন ধরে মন্দিরে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছি। আমার সময় মন্দিরে যথেষ্ট উন্নয়ন হয়েছে। সরকারের আদেশ অনুযায়ী বিভিন্ন উন্নয়মূলক কর্মকান্ডের পাশাপাশি ধর্মীয় উৎসব গুলো যথা নিয়মে পালন করে আসছি।

তিনি আরও বলেন, ঘটনার দিন সরকার ঘোষিত রাষ্ট্রীয় শোক প্রার্থনা  বিষয়ে মন্দিরের মূলফটকে তালাবদ্ধ থাকায় চাবি আনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষ চড়াও হয়। তারা চাবি দিবেন না এবং আমার লোকজনের ওপর চড়াও হয়। পরে রাষ্ট্রীয় শোক প্রার্থনা করতে পারিনি। ওই স্বার্থান্বেষী পক্ষ মন্দিরটিকে কৌশলে ধ্বংসের দিকে ঢেলে দিতে চায়। আর আমার বিরুদ্ধে এ পক্ষটি মিথ্যা অপপ্রচার করছে। ঘটনার দিন আমার লোকজনের ওপর চড়াও হয়ে মারধর করেন।

মন্দির কেন্দ্রীক সংঘর্ষ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রৌমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. গোলাম মুর্তজা জানান,খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। পাশাপাশি ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সন্ধ্যায় দু’পক্ষের প্রতিনিধিদের নিয়ে ইউএনও এর কার্যালয়ে সমাধানের লক্ষ্যে বসার কথা হয়েছে।

সম্পর্কিত