শুক্রবার, ২৮শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৭ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি
শুক্রবার, ২৮শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৭ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

যৌথবাহিনীর অভিযানে ২১৫১ বস্তা অবৈধ মজুদকৃত সার উদ্ধার ও জব্দ, স্থানীয়দের অভিযোগ ‘গুরু অপরাধে লঘু দন্ড’

বিমল কুমার রায়, পঞ্চগড় প্রতিনিধি:

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে অবৈধ সার মজুদের অভিযোগে যৌথ বাহিনী কর্তৃক অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে ২১ লক্ষ টাকা মুল্যের অবৈধ ভাবে মজুদকৃত ২ হাজার ১৫১ বস্তা সার জব্দ করা হলেও ভ্রাম্যমাণ আদালত সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীকে মাত্র ৩০ হাজার টাকা অর্থদন্ড করা হয়।

সোমবার (২৪ নভেম্বর) বিকাল ৫ টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো: মাহমুদুল হাসানের নেতৃত্বে যৌথবাহিনির একটি টিম উপজেলার দেবীডুবা ইউনিয়নের লক্ষীর হাট নামক বাজারের ৩টি গোডাউনে অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে একই এলাকার পাশাপাশি ৩ টি গোডাউন হতে বিভিন্ন সারের মোট ২ হাজার ১৫১ বস্তা অবৈধ মজুতকৃত সার উদ্ধার করা হয়, যার বাজার মুল্য প্রায় ২১ লক্ষ টাকা। জানা যায়, গোডাউন ৩ টির মালিক মো: সহিদুল ইসলাম বাবুল ওরফে বাবুল ডাক্তার।

অভিযানে ইউএনও ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল ইসলাম অভিযুক্ত সহিদুল ইসলামকে সার ব্যবস্থাপনা আইন, ২০০৬ এর ধারা ১২ অনুযায়ী ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করেন। সেই সাথে জব্দকৃত সার সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে কৃষকদের মধ্যে ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করে সমুদয় টাকা সহিদুল ইসলামকে প্রদানসহ অভিযুক্তের নিজস্ব জমিতে ব্যবহারের জন্য ২৪০ বস্তা সার প্রদানের আদেশ প্রদান করেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এতো বিপুল পরিমাণ অবৈধ সার উদ্ধার ও জব্দের পরও জরিমানার পরিমান অতি সামান্য হয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুযোগ থাকা স্বত্বেও এই ধারা অনুসরণ না করে অপেক্ষাকৃত যে ধারায় লঘু শাস্তি প্রদান করা যায় তা অনুসরণ করেছেন।

সারের অবৈধ মজুদ রোধে সরকার সার (ব্যবস্থাপনা) (সংশোধন) আইন ২০১৮-এ শাস্তি বাড়িয়েছে। ২০০৬ সালের আইনের ধারা ৮ সংশোধন করে আগের ৬ মাস কারাদণ্ড বা ৩০ হাজার টাকা জরিমানার পরিবর্তে ২ বছর কারাদণ্ড বা ৫ লাখ টাকা জরিমানা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া নিবন্ধন ছাড়া কেউ সার উৎপাদন, আমদানি, সংরক্ষণ, বিতরণ, বিপণন বা পরিবহন করতে পারবেন না।

স্থানীয় সাংবাদিক সিরাতুল মোস্তাকিম বলেন, আজকের দণ্ড অনিয়মকে উৎসাহিত করবে। কৃষকরা অনেক সময় বেশি দামে সার কিনলেও প্রশাসনের তেমন নজরদারি থাকে না। অভিযোগ পেলেও শুধু লোক দেখানো অভিযান চালানো হয়। তিনি আরও জানান, গত বছর কালীগঞ্জ বাজারে ২ হাজার ৩৭৭ বস্তা সার মজুদ ও বেশি দামে বিক্রির অপরাধে হাছেন আলীকে ভ্রাম্যমাণ আদালত ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছিল। অথচ এবার একই ধরনের অপরাধে মাত্র ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করে অভিযুক্তকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে ইউএনও মাহমুদুল হাসানকে ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। একইভাবে জেলা প্রশাসক কাজী মো. সায়েমুজ্জামানের মুঠোফোনেও যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়, কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি।

 

সম্পর্কিত