বিমল কুমার রায়, পঞ্চগড় প্রতিনিধি:
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে চাঁদাবাজি ও মুক্তিযোদ্ধাকে প্রকাশ্যে লাঞ্ছিত করার ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সচেতন এলাকাবাসীর ব্যানারে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছেন বক্তারা।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর ২০২৫) বিকেল ৪টায় দেবীগঞ্জ উপজেলা শহরের ঐতিহাসিক বিজয় চত্বরে অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধনে দেবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষ বিপুল সংখ্যায় অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধনস্থল পরিণত হয় বিক্ষোভ সমাবেশে।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, দেবীগঞ্জ পৌর এলাকার সাবেক কাউন্সিলর ও জামায়াতের সক্রিয় সদস্য আক্কাস আলী, একই এলাকার মৃত আলালের পুত্র আলিফকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে যান। পরে চার লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। আলিফ চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ৭ অক্টোবর আক্কাস আলী ও তার সহযোগীরা তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক ফাঁকা স্ট্যাম্প পেপারে স্বাক্ষর নেন।
এ ঘটনায় এলাকাবাসী গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
এছাড়াও মানববন্ধনে আরও উল্লেখ করা হয়, গত ৬ অক্টোবর সকাল ১১টার দিকে ভাউলাগঞ্জ বাজারে রাজনৈতিক তর্ক-বিতর্কের এক পর্যায়ে জামায়াত কর্মী সোহেল মাহমুদ (৩৫) স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ৮০ বছর বয়সী মুক্তিযোদ্ধা এস. এম. শাহাদুল ইসলামের ওপর হামলা চালান।
একজন মুক্তিযোদ্ধাকে প্রকাশ্যে হেনস্তা করার ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয় এবং এলাকাজুড়ে শুরু হয় নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড়।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন—ভুক্তভোগী আলিফের মা আফরোজা বেগম, দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব রাসেল আহমেদ প্রধান, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান রাজু, যুবদল সদস্য সচিব রোকনুজ্জামান সুমন, উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল গনি বসুনিয়া, সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন মো. তোবারক হ্যাপী, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. নজরুল ইসলাম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, “মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছিত করা শুধু একজন ব্যক্তিকে আঘাত নয়, এটি পুরো জাতিকে অবমাননা করা। যারা এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনায় জড়িত, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।”
মানববন্ধনে পাঁচ শতাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন। তারা হাত উঁচিয়ে স্লোগান দেন—
“চাঁদাবাজি বন্ধ করো”, “মুক্তিযোদ্ধাকে অপমানকারীদের বিচার চাই”, “দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করো”।
পরে উপস্থিত নেতা-কর্মীরা বলেন, যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হয় তবে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।