রবিবার, ২৬শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১০ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৪ঠা জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
রবিবার, ২৬শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১০ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৪ঠা জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

ঠাকুরগাঁওয়ে রুহিয়ায় কবরস্থান সংরক্ষণ কমিটির পথসভার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন

আহসান হাবিব রুবেল, স্টাফ রিপোর্টার:

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া ছালেহিয়া দারুসুন্নাত ফাজিল মাদ্রাসা সংলগ্ন ঘনিমহেষপুর মৌজার খোশকবালাকৃত জমি নাডোবা কবরস্থানের নামে দখল চেষ্টা ও একটি ‘ভূয়া কবরস্থান সংরক্ষণ কমিটি’ কর্তৃক আয়োজিত পথসভার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মধ্য মহেষপুর মরহুম মফিজ উদ্দিন সরকার ঘনিমহেষপুর গোরস্থান সংরক্ষন কমিটি রুহিয়ার ব্যানারে।

শনিবার (২৫ অক্টোবর) সকালে রুহিয়া থানা প্রেসক্লাব কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মাওলানা মহিরুল ইসলাম।

লিখিত বক্তব্যে মাওলানা মহিরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, গত ২০/১০/২০২৫ইং তারিখ রোজ রবিবার বিকাল ০৫.০০ ঘটিকা হতে সন্ধা ০৭.০০ ঘটিকায় পর্যন্ত উত্তরা বাজারে রুহিয়ায় ভূয়া গোরস্থান রক্ষা কমিটির নামে একটি কুচক্রী মহল আমার ও আমার জৈষ্ঠ ভ্রাতার মান সম্মান হানী করার জন্য অসৎ উদ্দ্যেশে আমাদের বৈধভাবে ক্রয়কৃত জমি জায়গা সম্পর্কে অশ্লীল ও মিথ্যা ভিত্তীহীন কথাবার্তা বলে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করে কথিত পথসভা করেন এবং আমাদেরকে বিভিন্ন হুমকি ধামকি সহ প্রাণ নাসের হুমকিও প্রদান করেন। যার প্রেক্ষিতে প্রকৃত তথ্য উপাত্ত এর ভিত্তিতে আপনাদের নিকট উপস্থাপন করা হলো। উহার প্রতিবাদে আজকের সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রশাসনের নিকট তাদের বীরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য শক্ত পদক্ষেপ কামনা করছি। তিনি বলেন, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া থানার অন্তর্গত ঘনিমহেষপুর মৌজার ঐতিহ্যবাহী জমিদার বংশের মরহুম মফিজ উদ্দীন সরকার এর একক মালিকানাধীন বর্ণিত বা নালিশী জমির প্রকৃত রায়তী মালিক। তিনি আমাদের বংশীয় দাদা সি.এস খতিয়ান ৫১৭ ও এস.এ খতিয়ান ৫৪১ উভয় খতিয়ানে মোট জমির পরিমাণ ৫.৩০ শতক।

বিশ্বস্ত সূত্রের বরাত দিয়ে মহিরুল ইসলাম বলেন, তাঁরা কতিপয় গরীব, অসহায়, আধিয়ার ও বর্গা চাষী ছিল। তারা তাঁর উক্ত ডাঙ্গা জমিতে তাদের মৃত ব্যক্তিদের দাফন বা মাটি দেওয়া শুরু করেন। তাঁর নামে অনেক জমি জায়গা থাকায় তিনি তাদের দাফনে তথা মৃত ব্যক্তিদের দাফন কাজে নিষেধ করেন নাই। উক্ত আধিয়ারগন উক্ত খতিয়ানের ৩৬১ ও ৩৬২ দাগে মোট ১.৭২ (এক একর বায়াত্তোর) শতক জমিতে মৃতব্যক্তিদের কবরস্থ করতেন। মধ্যেখানে কেয়ারের রাস্তার দক্ষিণে পার্শ্বে ৩৬৫ ও ৩৬৩ দাগে ৮৭.০০ (সাঁতাশি) শতক জমিতে তাঁদের মৃত ব্যক্তিদের কখনও কবর দিতেন না। ফলে তার সন্তানেরা বা ওয়ারিশগণ যুগ যুগ ধরে উক্ত জমি চাষাবাদ করিয়া আসিতেছেন। ব্রিটিশ আমলে সি.এস রেকর্ডের সময় ৩৬১ ও ৩৬২নং দাগের ১.৭২ (এক একর বাহাত্তোর) শতক জমির সহিত ভূল বসত তাদের আবদ যোগ্য ৩৬৫ ও ৩৬৩নং দাগে ৮৭ শতক জমীয় কবরস্থান হিসাবে রেকর্ড ভুক্ত হয়। তাঁরই ধারাবাহিকতায় এস.এ খতিয়ানের সময়ও কবরস্থান হিসাবে উল্লেখ করেন এবং তাঁর সন্তান ও নাতিগন উক্ত খতিয়ানের ৩৬৫ ও ৩৬৩ নং দাগের ৭৭ শতক জমি চাষাবাদ করিয়া আসিতেছেন।

পরবর্তীতে তাঁর সন্তান ও নাতিগন অর্থের প্রয়োজনে ১৯৯০ সাল হতে উক্ত জমি ক্রয় বিক্রয় শুরু করে। তাঁরই ধারাবহিকতায় তাঁর নাতিদের বা ওয়ারিশগণের নিকট হতে আমি মোঃ মহিউল ইসলাম ৪৬ (ছেচল্লিশ) শতক জমি এবং আমার জৈষ্ঠ ভ্রাতা আলহাজ্ব মাওঃ মোঃ মুজহারুল ইসলাম ২২ (বাইশ) শতক জমি ক্রয় করি। যা পর্যায়ক্রমে প্রায় ১৩টির মতো খোস কোবলা দলিল হয়। অতঃপর ২০০৬ সালে চলমান ভূমি জরিপ শুরু হলে আমাদের নামে ডাঙ্গা বা ভাঁটা হিসাবে মাঠ পর্চা সহ ডিবি খতিয়ান হয়েছে। আমার ক্রয়কৃত জমির চতুরপার্শে আম, কাঠাল, ইউকিলিপ্টার গাছ রোপন পূর্বক চাষাবাদ করে আসতেছি এবং আমার জৈষ্ঠ ভ্রাতা তাঁর ক্রয়কৃত সমস্ত জমিতে লিচু, আম ও ইউকিলিপ্টার গাছ রোপন করে উভয়ের গাছগুলো বয়স প্রায় ২৫-৩০ বছর।
তিনি উল্লেখ্য করে বলেন, উক্ত ৩৬৫ ও ৩৬৩ নং দাগের সাকুল্য জমি মূলমালিক এর ছেলে ও নাতিগণ নিজ দখলে চাষাবাদ করতেন তখন এলাকার কোনো ব্যক্তি কোনো প্রকার আপত্তি বা অভিযোগ করেন নাই এবং আমাদের নিকট মূল মালিক বা ওয়ারিশগণ যখন উক্ত জমি বিক্রয় করতেছিলেন ও আমাদের নামে মাঠ পর্চা হলো এবং আমরা উপরোক্ত গাছগুলো রোপন করে আবাদ শুরু করি তখনও কোনো ব্যক্তি কোনো প্রকার আপত্তি বা অভিযোগ করেন নাই। অতঃপর আমার ক্রয়কৃত জমি হতে ২২.২৫ (সোয়া বাইশ) শতক জমি আমার নামে খারিজ খতিয়ান করা হয় তখনও কেউ আপত্তি করেন নাই যার খারিজ নং-১২৭২ (১০-১) ৪০২৮/২৭-০২-২০০৬।

তিনি বলেন, উক্ত স্বরযন্ত্র কারী ব্যক্তি গণ নিজেরাই কবর ভেঙ্গে দিয়ে আমার উপর ও আমার বংশের কতিপয় ব্যক্তির উপর ঠাকুরগাঁও কোর্টে কবর ভাঙ্গার মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন মামলা করেন। অতপর উক্ত ব্যক্তিগণ আমাদের রোপনকৃত মোটা মোটা কিছু ইউকিলিপ্টার গাছ কেটে নিয়ে যায় মর্মে আমি তাঁদের ৩০ (ত্রিশ) জনকে আসামি করে কোর্টে মামলা দায়ের করি। মামলা নম্বর সি আর ১১৮ ও তারিখঃ ০৭/১০/২০২৫। আমরা উক্ত ভূয়া গোরস্থান কমিটির পথসভার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

পরিশেষে তিনি সংবাদ কর্মীদের মাধ্যমে জেলা, উপজেলা এবং রুহিয়া থানা প্রশাসনের নিকট সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে কুচক্রী মহলদের দৃষ্টান্ত শাস্তি দাবি করেন।

সম্পর্কিত