মঙ্গলবার, ৫ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২১শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১১ই সফর, ১৪৪৭ হিজরি
মঙ্গলবার, ৫ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২১শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১১ই সফর, ১৪৪৭ হিজরি

জয়পুরহাটে এম,পি আহত ,আন্দোলনকারী ও পুলিশের সংঘর্ষে নিহত ১

 

মোঃ গোলাম মোরশেদ
স্টাফ রিপোর্টার (জয়পুরহাট)

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা সরকার পতনের এক দফা কর্মসূচির সমর্থনে জয়পুরহাটে সংঘর্ষে ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ তিনজনের মধ্যে মেহেদী হাসান বিশাল নামে একজন নিহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগ কর্মী, সাংবাদিক, শিক্ষার্থী ও পথচারীসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
জানা গেছে, বেলা ১১টার দিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে শহরের বাটার মোড়ে জড়ো হন। একই স্থানে আগে থেকে জড়ো হয়ে থাকা বিএনপির নেতা-কর্মীরা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দেন। বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের জিরো পয়েন্ট-পাঁচুরমোড় আসেন। এ সময় পুলিশ ওই সড়কে ব্যারিকেড দেয়। পাঁচুর মোড়ের অদূরে জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে অবস্থানরত কিছু লোকজন আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্য করে উসকানি দিতে থাকেন। তখন আন্দোলনকারীরা পেছন দিক থেকে রেলগেট অতিক্রম করে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালান।
আন্দোলনকারীরা দলীয় কার্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করে স্থানীয় সংসদ সদস্য সামছুল আলম দুদুসহ আওয়ামী লীগের অন্তত ২০ জনকে পিটিয়ে জখম করেন। একই সঙ্গে তাঁরা দলীয় কার্যালয়ের আসবারপত্র ভাঙচুর করেন এবং সেখানে আগুন ধরিয়ে দেন। আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে থাকা পাঁচটি মোটরসাইকেলও পুড়িয়ে দেন আন্দোলনকারীরা। এরপর তাঁরা রেলস্টেশনসংলগ্ন ছাত্রলীগের দলীয় কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেন।
উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, ও রাবার বুলেট ছুড়ে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে। এ সময় তিনজন শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হন। এতে একুশে টিভির জেলা প্রতিনিধি শফিকুল ইসলাম ছাড়াও অন্তত ৪০ জন শিক্ষার্থী, ৩ জন পথচারী, ২০ আওয়ামী লীগ সদস্যসহ শতাধিক লোক আহত হন। আহতদের জয়পুরহাট জেলা শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁদের মধ্যে বেলা ২টা পর্যন্ত ৬৮ জনকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত মেহেদী হাসান বিশালের (১৮) অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে বগুড়া স্থানান্তর করা হয়। পথে কালাই উপজেলা সদরে পৌঁছালে তিনি মারা যান।
বিষয়টি নিশ্চিত হতে তাঁকে কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য নেওয়া হয়। তখন কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্মরত চিকিৎসা কর্মকর্তা নাজনীন নাহার ডেইজি মেহেদী হাসান বিশালের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এদিকে মেহেদী হাসানের মৃত্যু খবর ছড়িয়ে পড়লে আন্দোলনকারীরা আরও উত্তেজিত হন। এরপর বিকেলে আন্দোলনকারীরা শহরের বিভিন্ন সড়কে অবস্থান করেন। একপর্যায়ে তাঁরা জয়পুরহাট সদর থানা কার্যালয় ঘেরাও করতে আসেন। তখন পুলিশ রাবার বুলেট ছোড়ে। এ সময় আরও দুজন গুলিবিদ্ধ হন বলে খবর পাওয়া যায়। এখন শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
এ বিষয়ে জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ নূরে আলম জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তৎপর রয়েছেন

সম্পর্কিত