বুধবার, ৩০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২রা জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি
বুধবার, ৩০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২রা জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

সরস্বতী পূজা ও পহেলা ফাল্গুনকে ঘিরে উৎসবমুখর বেরোবি

রুশাইদ আহমেদ: রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) বর্ণাঢ্যভাবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব সরস্বতী পূজা এবং পহেলা ফাল্গুন উদযাপিত হয়েছে।

বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকেই নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে সরস্বতীর পূজা উদযাপনের শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কেন্দ্রীয়ভাবে আয়োজনের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল এবং সকল বিভাগ পৃথক পৃথকভাবে এ পূজার আয়োজন করে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম এ ধর্মীয় উৎসবে জ্ঞানের দেবী স্বরস্বতীর চরণে ফুল দেন সনাতন ধর্মালম্বী শিক্ষার্থীরা।

সকালে পূজা মণ্ডপ পরিদর্শনে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হাসিবুর রশীদ স্বরস্বতী পূজা উপলক্ষে বেরোবি উপাচার্য সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, উৎসবমুখর পরিবেশে সকল বিভাগের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আগামীতে সবার অংশগ্রহণে এ আয়োজন আরো বেশি সুন্দর হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন উপাচার্য। এ সময় তিনি ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যতের উন্নতি কামনা করেন।

এ ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সরিফা সালোয়া ডিনা বলেন, বিদ্যা শিক্ষার মধ্য দিয়ে অহঙ্কার বর্জন করে আমরা যেন মানুষ হিসেবে মানবতার ধারক হিসেবে গড়ে উঠতে পারি সে লক্ষ্যেই আমাদের কাজ করা উচিত।

এ সময় সরস্বতী পূজা উদযাপন কমিটির আহবায়ক গণিত বিভাগের অধ্যাপক কমলেশ চন্দ্র রায়, সদস্য সচিব পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. বকুল কুমার চক্রবর্তী, বেরোবি প্রক্টর মো. শরিফুল ইসলাম, শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. বিজন মোহন চাকী, সাধারণ সম্পাদক মোঃ আসাদুজ্জামান মন্ডল আসাদ, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) সৈয়দ আনোয়ারুল আজিমসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে পূজার পাশাপাশি পহেলা ফাল্গুন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় সড়কে বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে বেরোবির শিল্প ও সাহিত্য সংসদের উদ্যোগে একটি ব্যতিক্রমী ‘চিঠি উৎসব-২০২৪’ এর আয়োজন করা হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়ে তাঁরা তাঁদের বন্ধু-বান্ধব, প্রিয়জন এবং পরিবারের সদস্যদের উদ্দেশে চিঠি লেখেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিল্প ও সাহিত্য সংসদের সাধারণ সম্পাদক মো. নাঈম উদ্দিন বলেন, মানুষের কথার সঙ্গে প্রাণের সংযোগ সবচেয়ে সুন্দরভাবে ঘটে থাকে চিঠির মাধ্যমে। চিঠি আমাদের আগ্রহ করতে বা বাড়াতে শেখায়, আমাদের ধৈর্যশীল হয়ে অপেক্ষা করতে শেখায়। বর্তমান আধুনিক যুগে কেন এ ধরনের আয়োজন এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা এখন খুব যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছি। ফলে আমাদের মনের গহীনে লুকিয়ে থাকা যে চাওয়াগুলো আছে তা থেকে আমরা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছি। এই বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া সংযোগটিকে পুনরায় সংযুক্ত করার লক্ষ্যেই আমাদের আজকের এ আয়োজন।

পূজা ও চিঠি উৎসবে আসা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী তৃষা কুন্ডু বলেন, সরস্বতী পূজা ও পহেলা ফাল্গুন একই দিনে হওয়ায় আমাদের ক্যাম্পাস সকল ধর্ম, বর্ণ ও বয়সের মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। এ মিলনমেলার অংশ হতে পেরে নিজেকে খুবই সৌভাগ্যবান মনে হচ্ছে।

সম্পর্কিত