লালমনিরহাট প্রতিনিধি : লালমনিরহাটে খায়রুল আলম সবুজ পাটোয়ারী (৪০) নামে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকাকে জোর অপহরণ করে পালানোর অভিযোগ উঠেছে। তবে এলাকাবাসী বলছেন, একই স্কুলে চাকরি করার সুবাদে দীঘদিন ধরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি প্রকাশ পেলে তারা দুজনেই পালিয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার রাতে ওই শিক্ষিকার স্বামী মাহাবুব রহমান মিঠু বাদী হয়ে লালমনিরহাট সদর থানায় প্রধান শিক্ষক ও অভিযুক্ত শিক্ষকসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক খায়রুল আলম সবুজ পাটোয়ারী সদর উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের খোরাগাছ গ্রামের আবুল কাশেম পাটোয়ারীর ছেলে। তিনি একই এলাকার উমাপতি হর নারায়ণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
ওই শিক্ষিকার স্বামী অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, উপজেলার উমাপতি হর নারায়ণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুল আলম সবুজ দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করে আসছিল তার সহকর্মী একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা এক সন্তানের জননী রিনা বেগমকে (৩০)। বিষয়টি রিনা বেগম তার স্বামীকে জানালে ওই শিক্ষককে সতর্ক করা হয়।
এতেও আচরণ সংশোধন না করে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাঞ্জুমা আক্তারের সহায়তায় রিনাকে ফিরনির সঙ্গে চেতনানাশক ওষুধ খাওয়ান খায়রুল। এতে রিনা অসুস্থ হয়ে গেলে তার স্বামী মাহাবুর তাকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে চিকিৎসা করান। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাঞ্জুমার কাছে বিচার প্রার্থনা করেও কোনো সুফল পাননি রিনার পরিবার।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিদ্যালয় থেকে ফিরে বাড়িতে একা ছিলেন রিনা। এ সময় তার স্বামী বাজারে থাকার সুযোগে শিক্ষক খায়রুল আলম ওই বাড়িতে গিয়ে পুনরায় চেতনানাশক ওষুধ সেবন করিয়ে তার বাড়ির স্বর্ণালঙ্কার, নগদ পৌনে চার লাখ টাকা ও শিক্ষাগত যাবতীয় কাগজপত্রসহ রিনাকে নিয়ে পালিয়ে যান। পরে বাড়ি ফিরে মাহাবুর রহমান স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পারেন- তার স্ত্রীকে গাড়িতে করে নিয়ে গেছেন খায়রুল আলম।
এদিকে শিক্ষক খায়রুলের বাড়িতে গিয়েও রিনার সন্ধান না পেয়ে রাতেই সদর থানায় ৪ জনকে আসামি করে স্ত্রীকে অপহরণের একটি অভিযোগ দায়ের করেন মাহাবুর রহমান। ঘটনার ২ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো রিনার কোনো সন্ধান পায়নি পুলিশ। অপরদিকে অভিযুক্ত খায়রুল আলম সবুজও আত্মগোপনে রয়েছেন।
লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) এরশাদুল হক বলেন, অপহরণের একটি অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত চলছে। তবে এখন পর্যন্ত উভয় শিক্ষকের সন্ধান পাওয়া যায়নি।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার গোলাম বলেন, বিষয়টি স্থানীয়দের মাধ্যমে শুনেছি। তবে কেউ লিখিতভাবে অবগত করেননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।