শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি
শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

লালমনিরহাটের হাটবাজারে নকল বিড়ি প্রতি মাসে কয়েক কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

সাব্বির আহমেদ লাভলু,লালমনিরহাট সংবাদদাতা:লালমনিরহাট জেলার প্রতিটি হাট-বাজারে নকল ব্যান্ডরোল ও ব্যান্ডরোলবিহীন বিড়িতে সয়লাব হয়ে গেছে। নকল ব্যান্ডরোলবিহীন এসব বিড়ি তৈরি করে কিছু অসাধু বিড়ি ব্যবসায়ী ও ভুয়া কোম্পানি এসব অবৈধ ব্যবসা পরিচালনা করে সরকারকে ঠকিয় লুটে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা।

খোজ নিয়ে দেখা গেছে লালমনিরহাট জেলায় প্রায় ৩৫টি বিড়ি কোম্পানি নামে বেনামে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করেলেও মূলত তিনটি কোম্পানির বৈধতা রয়েছে। অন্য সকল বিড়ি কোম্পানি বৈধ কোনো কাগজপত্র নেই।
প্রশাসন ও কর্তৃপক্ষকের নজর এড়িয়ে বাড়িতে বাড়িতে এসসব নকল বিড়ি তৈরী হচ্ছে বিভিন্ন বাজারে এসব বিক্রি করার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন প্রান্তরে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমেও সরবরাহ করা হচ্ছে,বৈধ বিডি কোম্পানিদের দাবি কর্তৃপক্ষ এ বিষয় অবগত থাকলেও কার্যকরী কোন ভূমিকা রাখছেন না।

একেবারেই বাধাহীন ভাবে হাট-বাজারে নকল ব্যান্ডরোল ও ব্যান্ডরোলবিহীন বিড়ি বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতি মাসে লালমনিরহাট সরকার প্রায় ৩ কোটি টাকারও বেশী রাজস্ব হারাতে হচ্ছে।

লালমনিরহাট জেলার পাঁচ উপজেলাতেই নকল বিড়ি তৈরি হচ্ছে, জেলার কালীগঞ্জ ও আদিতমারী উপজেলায় বেশি নকল বিড়ি তৈরির ফ্যাক্টরি রয়েছে বলে জানা যায়।

জেলার উল্লেখযোগ্য যেসব স্থানে নকল বিড়ি তৈরী করে বাজারজাত ও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সরবরাহ করা হচ্ছে জেলার কালীগঞ্জ,পাটগ্রাম,হাতীবান্ধা,চামটারহাট,সাপ্টিবাড়ি,চাপারহাট,ভোটমারী,চৌধুরিরহাট সহ জেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিভিন্ন বাসা বাড়ি ও গোডাউনে গোপনে এসব নকল বিড়ি তৈরি করে জেলার বিভিন্ন হাট বাজারের দোকানে পাইকারি ও খুচরা বিক্রি হচ্ছে। নকল এসব বিড়ি জেলার বাহিরে কুরিয়ার সার্ভিস এর মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রান্তরে যাচ্ছে।

প্রতিটি বিড়ির প্যাকেট এর জন্য ব্যান্ডরোল সরকার নির্ধারিত ৯ টাকা ১০ পয়সা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। এসব নকল বিড়ির কারণে সরকার প্রতি মাসে প্রায় ৩ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব হারাচ্ছে যা বছরে শত কোটি টাকােও বেশী বেশি।
নকল ব্যান্ডরোল ও ব্যান্ডরোল বিহীন বিড়ির প্যাকেট ১০ দামে পাওয়া যাচ্ছে এতে বৈধ ও সরকারকে কর প্রদানকারী কয়েকটি বিড়ির কোম্পানি স্থায়ী ক্ষতির মুখে পড়েছে। নিজনামে নকল বিড়ি তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন বড় কোম্পানির নাম নকল করে ও নকল ব্যান্ডরোল তৈরি করে বিড়ি প্রস্তুত করছে অসাধু এই গোষ্ঠীটি।

বর্তমান জেলায় যে কয়েকটি নকল বিড়ি পাওয়া যাচ্ছে সে সব হচ্ছে, সফল বিড়ি,আরব বিড়ি,ডায়মন্ড বিড়ি,স্টার আকিজ,রাশেদ বিড়ি,সালাম বিড়ি,আশা বিড়ি,বিশাল বিড়ি,বিস্তা বিড়ি,শৈকত বিড়ি,প্রজাপতি বিড়ি,হেলাল বিড়ি, নুর বিড়ি, আবুল বিড়ি সহ মোট ৩৫টির বেশী বিড়ি বাজারে সব দোকানে পাওয়া যাচ্ছে।

এ বিষয়ে আকিজ বিড়ি ম্যানেজার মোঃ নাসির উদ্দিন বলেন, বাজারে নকল বিড়ি বিক্রি বন্ধ হলে সরকারকে প্রতিমাসে আরও ২ কোটি টাকার বেশি ট্যাক্স শুধু আকিজ বিড়ির দিতে পারতো, নকল বিড়ি বন্ধ না হওয়ার কারণে সরকার এই দুই কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে বলে তিনি জানান।

নকল বিড়ি তৈরি ও সরকারের রাজস্ব হারানোর বিষয়ে লালমনিরহাট জেলার রাজস্ব কর্মকর্তা স্বপন মন্ডল বলেন, ব্যান্ডরোল বিহীন নকল বিড়ি ও নকল ব্র্যান্ডরোল্ড লাগানো বিড়ি ,ও ব্যান্ডরোল্ড বিহীন সকল বিড়ি উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়ার জন্য প্রচেষ্টা চলছে,এসব বিডি তৈরীর প্রতিষ্ঠানের নির্দিষ্ট কোনো স্থানে না হওয়ার কারণে সম্ভব হচ্ছে না, এখন দিন দিন এ বিড়ির গ্রাহক কমে যাওয়ার কারণেও রাজস্বও কম হওয়ার কারণ বলে তিনি জানান।

সম্পর্কিত

মাত্রই প্রকাশিত