মাসুদ রানা রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলাধীন ঝগড়ারচর পানি নিয়ন্ত্রণ বেড়ীবাঁধটি সংস্কার -মেরামত না করায়,
আগামী বর্ষা মৌসুমে বাঁধের দক্ষিন পশ্চিম অঞ্চলে হাজার হাজার একর জমির ফসল বিনষ্ট
হয়ে যাওয়ার আশংকা করা হচ্ছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রৌমারী উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের ছাটকড়াইবাড়ী হতে ঝগড়ারচর ডিসি রাস্তা পর্যন্ত, (পাবসস) ক্ষুদ্র পানি সম্পদের ৬ কিলো ২শ মিটার বেড়ীবাঁধটির বেহাল দশা।
ক্ষুদ্র পানি সম্পদের বেড়ীবাঁধটি (পাবসস) কমিটির ৪৫৭ জন সদস্য ও ৬শত উপকার ভোগীর মাধ্যমে ২০০১ সালে কাজ শুর করা হয়। যার সমাপ্তি হয় ২০০৪ সালে। বেড়ী বাঁধটি নির্মানের ফলে বাঁধের পশ্চিম পাশ্বে প্রায় ১০ হাজার একর ফসলী জমি বন্যার ক্ষতি থেকে রক্ষা পেয়েছিল।
এদিকে একাধারে ১০ বছর ওই বাঁধ মেরামতে কোন প্রকার বরাদ্দ না দেওয়ায় বাঁধটির কোন সংস্কার হয়না। যারফলে গত বন্যায় ভারতের কুকুর মারা ১০৫৮-৫৯ সীমান্তে ভারত থেকে বয়ে আসা জিঞ্জিরাম নদীর উপর বোয়ালিয়া ব্রীজের নীচ দিয়ে পাহাঢ়ী ঢল প্রচুন্ড বেগে ধর্মপুর জিনজিরাম নদীতে আছরে পড়ে। পানির প্রচুন্ড চাপে পাবসসের
বেড়ীবাঁধটি ৬ স্থানে ভেঙ্গে খানখান হয়ে গভীর খাদের সৃষ্টি হয়। বৃষ্টি-বন্যায় খানাখন্দে ছিন্ন ভিন্ন হয়ে পড়ে। এদিকে নামকেওয়াস্তে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১৩ লাখ ও ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১৩ লাখ টাকা বাঁধ সংস্কারের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। সামান্য বরাদ্দের ফলে বাঁধটি ভালভাবে মেরামত সম্ভব হয়না।
যার ফলে ২০১৯ সালের ভয়াবহ বন্যায় ভারতীয় পাহাঢ়ী ঢলের তিব্র স্রোতের তোড়ে বাঁধটি
জেসমিনের বাড়ির কাছে ১শ মিটার, হাশেমের বাড়ির কাছে ৩০ মিটার, মোতালিবের বাড়ির নিকট, আব্দুল হাকিম ,মতিয়ার ও সাখাওয়াতের বাড়ির পাশ্বে সহ অসংখ্য খানা খন্দের সৃষ্টি হয়। এমনকি বাঁধটির প্রায় ২শ মিটার ভেঙ্গে জিনজিরাম নদে পরিনত হয়। কিন্ত আশায় গুড়ে বালি, কৃষকের হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম,মাথার ঘাম পায়ে ফেলানো
কষ্টার্জিত সোনার ফসল সর্বনাশা পাহাঢ়ী ঢলের তোড়ে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। রাস্তাটি নির্মানের শুরুতে ওই সীমান্ত এলাকার মানুষ রাস্তা পথে চলাচলে স্বাচ্ছন্দ বোধ করত। সীমান্তবর্তি গ্রামের ছেলে-মেয়েরা ওই পথে সহজেই স্কুল কলেজে যাতায়াত করত। বাঁধটি না থাকায় ওই অঞ্চলের কৃষকের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে। বাঁধটিতে লাখ লাখ
টাকা ব্যায়ে একটি স্লুইজ গেট ও দুটি রেগুলেটর থাকলেও বাঁধ ভাঙ্গা থাকার কারণে আসছেনা কোন কাজে। এবিষয়ে ঝগড়ারচর (পাবসস)কমিটির সভাপতি জোবাইদুল ইসলাম,সম্পাদক মিজানুর
রহমান,ওই ওয়ার্ডে ইউপি সদস্য শাহাজাহান, ইউপি সদস্য আবুল হাশেম বলেন, বেড়ীবাঁধের ভিতরে প্রায় ১০ হাজার একর আবাদী জমি রয়েছে। যাহা ভারতীয় পাহাঢ়ী ঢলের কড়াল গ্রাসের মুখে।
বাঁধটি ভেঙ্গে কয়েক জায়গায় বড়বড় গভির গর্তের সৃষ্টি হলে এঅঞ্চলের কৃষক হতাশাময়
জীবন যাপন করছে। তবে বাঁধটি বষার্ মৌসুমের আগে মেরামত না করলে হাজার হাজার
একর ফসলের ক্ষতি সাধিত হবে।
এব্যাপারে রৌমারী উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, ঝগড়ারচর বেড়ীবাঁধটি ইতো মধ্যে আমার একটি টিম সরেজমিন রিপোট সংগ্রহ করেছে।
বাঁধটির অবস্থা বড়ই নাজুক। তবে বাঁধটি পুণ নিমার্ণ বা মেরামতের জন্য
কুড়িগ্রাম এলজিইডি প্রকৌশলী বরাবর আবেদন পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।রৌমারীতে ক্ষুদ্র পানি সম্পদের বেশ কয়েকটি বেড়ি বাঁধ রয়েছে। এই বাঁধটি গুরুত্ব পুর্ণ হওয়ায় বরাদ্দের জন্য উর্ধতন কতর্ৃপক্ষের নিকট আবেদন পাঠানো হবে।