স্টাফ রিপোর্টার, রাজবাড়ীঃ
দেশের ব্যস্ততম নৌরুট রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া। এই দুই নৌরুটের লঞ্চে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার প্রায় ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। সেটাও আবার রীতিমতো টিকিটে দৃশ্যমান।
চলতি বছরের ৪ এপ্রিল বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের ভাড়া এবং উন্নয়ন শাখার পরিচালক মো. জয়নাল আবেদীন ও নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের ভাড়া ও উন্নয়ন শাখার উপ-পরিচালক শম্পা রানী স্বাক্ষরিত এক পরিপত্র জারি করা হয়।
যেখানে প্রথম ১০০ কিলোমিটার এর জন্য ২.৭৭ টাকা হিসেবে দৌলতদিয়া পাটুরিয়া এবং পাটুরিয়া দৌলতদিয়া নৌরুটে লঞ্চ ভাড়া নির্ধারিত করে দেয় ২৯ টাকা। যা সবার জন্য প্রযোজ্য।
কিন্তু সরকারি এই নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে টিকিটে ৪০ টাকা লিখে ভাড়া আদায় করছে লঞ্চ মালিক সমিতি। বিআইডব্লিউটিএ এবং অন্যান্য প্রশাসনের সামনেই ঘটছে এমন ঘটনা।
পাটুরিয়া ঘাট থেকে আগত দৌলতদিয়া টার্মিনালে আগত লঞ্চের যাত্রী ইকবাল হাসান বলেন, সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী ভাড়া হওয়ার কথা অথচ আমরা জানি না ভাড়া ২৯ টাকা। কোথাও কোনো বোর্ড টানানো নেই। টিকিটে ৪০ টাকা লিখে আমাদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে। যাত্রীদের সঙ্গে বড় ধরনের প্রতারণা করা হচ্ছে। সবকিছুই চলছে তাদের হুকুমে। সরকারি আদেশ-নিষেধের কোনো মূল্য নেই। আর এগুলো মনিটরিং করার কোনো ব্যবস্থা নেই। যে যেভাবে পারছে গলা কাটছে। আর আমরা সাধারণ জনগণ বলির পাঠা হচ্ছি।
ঈদের ছুটিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন এমন আর এক যাত্রী মোতাহার হোসেন বলেন, আমরা বাড়তি ভাড়া দেওয়ার পাশাপাশি ঈদের ছুটিতে কোনো কিছু বাড়িতে নিয়ে যেতে চাইলে তার জন্য আবার অতিরিক্ত ভাড়া গুণতে হয়। অথচ একজন যাত্রী কতটুকু মালামাল বহন করতে পারবে তারও সুনির্দিষ্ট কোনো কিছু উল্লেখ নেই কোথাও।
এদিকে, বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ বলছে, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় সম্পূর্ণ অনৈতিক ও বেআইনি। একজন লোক যতটুকু মালামাল নিজে বহন করতে পারবে তার জন্য বাড়তি ভাড়া দিতে হবে না।
দৌলতদিয়া পাটুরিয়া নৌরুটে লঞ্চ মালিক সমিতির অফিস সহকারী জুয়েল বলেন, এটা বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃক নির্ধারিত ভাড়া যে কারণে আমরা টিকিট করে ভাড়া আদায় করি। কিন্তু এ বছর পরিপত্রে ২৯ টাকা আছে, তা আমার জানা নেই।
বিআইডব্লিউটিএ’র সাব-ইন্সপেক্টর শিমুল ইসলাম বলেন, আমরা নিষেধ সত্ত্বেও তারা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। আমাদের কোনো কথাই শুনে না।
বিআইডব্লিউটিএ’র উপ-পরিচালক (পোর্ট অফিসার) মো. মামুনুর রশীদ বলেন, উল্লিখিত নির্দেশনায় ডেকের ভাড়া ২৯ টাকা উল্লেখ করা হয়েছে। তবে তারা যেহেতু চেয়ার ও উপরের ডেস্কে বসিয়ে যাত্রী নেয়, তারা একটু ভাড়া বেশি নেয়। তবে পাটুরিয়া অঞ্চলের লঞ্চঘাটের কর্তৃপক্ষ বলেছে, তারা ৩৬ টাকার ভাড়া চল্লিশ ৪০ টাকা করে নেয়।