স্টাফ রিপোর্টার, রাজবাড়ীঃ
রাজবাড়ীতে রান্না করতে গিয়ে আগুনে পুড়ে ছালমা বেগম (৪৬) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (১৮ মে) সকাল ৭টার দিকে সদর উপজেলার খানখানাপুর ইউনিয়নের উজান খানখানাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ছালমা বেগম ওই গ্রামের মৃত খোকন গাজীর স্ত্রী।
ছালমা বেগমের ছেলে পারভেজ গাজী বলেন, আমি ও আমার স্ত্রী পিংকি ঢাকার জুরাইন এলাকায় থাকি। সেখানে আমি কনস্ট্রাকশন সাইটে রাজমিস্ত্রীর কাজ করি। বাড়িতে আমার মা এবং আমার ছেলে সিয়াম ও মেয়ে শ্রাবন্তী থাকে। ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণি ছাত্র ও মেয়ে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী।
সকাল ৭টার দিকে আমার মা রান্নাঘরে রুটি বানাতে যান। এ সময় অসাবধানতাবশত চুলা থেকে তার পরনের ম্যাক্সিতে আগুন লেগে পুরো শরীর জ্বলে ওঠে। আমার মা ছোটাছুটি করলে ইটের ওপর পড়ে গিয়ে মাথা ফেটে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। আমার ছেলে-মেয়ে প্রতিবেশীদের ডেকে আনলে তারা আগুন নেভায়। ততক্ষণে মায়ের শরীরের অনেকটাই পুড়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, আমাদের বাড়ি থেকে দুই কিলোমিটার দূরে আমার বোনের বাড়ি। খবর পেয়ে বোন পারুল এসে আমার মাকে উদ্ধার করে সকাল ৯টার দিকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। আমাকে ফোন করলে আমিও ঢাকা থেকে রওনা হই। তবে ফরিদপুর হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক ও নার্সরা আমার মায়ের চিকিৎসায় কোনো গুরুত্ব দেননি।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আমি ঢাকা থেকে এসে দেখি আমার মা বিনা চিকিৎসায় ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পড়ে আছেন। দেড় ঘণ্টায় শুধু মায়ের মাথায় একটি ব্যান্ডেজ ছাড়া চিকিৎসরা আর কোনো চিকিৎসাই দেননি। আমি দ্রুত মাকে ওই হাসপাতাল থেকে নিয়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করতে যাই। তবে হাসপাতাল থেকে নিচে নামানোর পরপরই আমার মা মারা যান। চিকিৎসকদের অবহেলার কারণে আমার মায়ের মৃত্যু হয়েছে বলে জানান তিনি।
খানখানাপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ (এসআই) কামরুজ্জামান শিকদার বলেন, আগুনে পুড়ে মৃত্যুর কোনো খবর এখনো পর্যন্ত আমরা পাইনি। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।