শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি
শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

রাজবাড়ীতে বসত ঘরে আগুন “ভেতর থেকে বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার শোনা যায়”

মোঃ আমিরুল হক, রাজবাড়ী ঃঘরের বেড়ার টিনের ফাঁক দিয়ে দেখি ফুফুর করে দাও দাও করে আগুন জ্বলছে। বাইরে বের হলে আগুনের ভেতর থেকে অনেক জোরে বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকারের আওয়াজ আসতে থাকে। এ সময় আব্বু ফুফুকে বাঁচাতে ঘরের ভেতর ঢোকার চেষ্টা করলে তিনিও আগুনে দগ্ধ হন।

বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৪টার দিকে রাজবাড়ীর সদর উপজেলার শহীদওহাবপুর ইউনিয়নের আহলাদিপুর গ্রামে মৃত রাবেয়া বেগম বরুর (৭২) মরদেহ উদ্ধারের পর দগ্ধ ইউনুস শেখের (৬০) মেয়ে চাঁদনী আক্তার এ সব কথা বলেন। মৃত রাবেয়া বেগম বরু একই এলাকার বাসিন্দা।

চাঁদনী আক্তার বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে আমার ফুপু ওনার পাটকাঠি ও টিনের ছাপড়াঘরে একা ঘুমিয়ে ছিলেন। আর আমরা আমাদের ঘরে ঘুমিয়েছিলাম। ভোর ৪টার দিকে আমাদের ভেঙে যায়। এ সময় ঘরের টিনের ফাঁক দিয়ে দেখি ফুপুর ঘরে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে।

আব্বুকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে আমরা বাইরে বের হলে ফুপুর চিৎকার শুনতে পাই। ফুপু বাঁচাও বাঁচাও বলে জোরে চিৎকার করছিলেন। এ সময় আব্বু ফুপুকে বাঁচাতে ঘরের ভেতরে ঢুকার চেষ্টা করলে তিনি অগ্নিদগ্ধ হন। তখন প্রতিবেশীরা এসে আব্বুকে উদ্ধার করে দ্রুত ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। তবে ফুপুকে আর ঘর থেকে বের করা যায়নি তিনি ঘরের ভেতরে আগুনে পুড়ে মারা যান। পরে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেয়া হলে তারা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

চাঁদনী আরও বলেন, আমার ফুপু ঘরের মেঝেতে খড় বিছিয়ে তার ওপর বিছানা করে ঘুমাতেন। ঘরে তিনি মশার কয়েল জ্বালাতেন। মাঝে মাঝে চেরাগ বাতি জ্বালিয়েও ঘুমাতেন। আমাদের ধারণা, মশার কয়েল অথবা চেরাগের থেকে ঘরের পাট কাঠিতে আগুন লেগে সারা ঘরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আর খড়ের বিছানায় আগুন লেগে ফুপুর শরীরে দ্রুত আগুন জ্বলে ওঠে।

চিকিৎসক জানান, আমার আব্বুর শরীরের ৪০ শতাংশ অংশ পুড়ে গেছে। তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক।

রাজবাড়ী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের উপসহকারী পরিচালক মোঃ জাকির হোসেন বলেন, খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে ১০ মিনিটের মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। ততক্ষণে বৃদ্ধা রাবেয়া বেগম আগুনে পুড়ে মারা যান। আগুনের সূত্রপাত কীভাবে হলো তা তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে।

খানখানাপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক (এস আই) সেলিম হোসেন বলেন, এ বিষয়ে মৃত রাবেয়া বেগমের পরিবারের সদস্যদের কোনো অভিযোগ নেই। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে।

সম্পর্কিত