রুশাইদ আহমেদ: রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) যথাযোগ্য মর্যাদায় আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পরমাণু বিজ্ঞানী প্রয়াত ড. এম. এ. ওয়াজেদ মিয়ার ৮২তম জন্মবার্ষিকী পালিত হয়েছে।
শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় এ উপলক্ষে রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার ফতেহপুরে ড. এম. এ. ওয়াজেদ মিয়ার সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হাসিবুর রশীদ ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সরিফা সালোয়া ডিনা।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে উপাচার্য বলেন, ড. এম. এ. ওয়াজেদ মিয়া আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পরমাণু বিজ্ঞানী। জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক পর্যায়ে তাঁর অনেক অবদান রয়েছে। বিজ্ঞানের চর্চায় বরেণ্য এই পরামাণু বিজ্ঞানীর অভিজ্ঞতা ও দর্শনকে ছড়িয়ে দিতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কাজ করবে। এ লক্ষ্যে আগামীতে ড. ওয়াজেদ মিয়ার বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের ওপর একটি আন্তর্জাতিক সেমিনার আয়োজনের পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলমগীর চৌধুরী, শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. বিজন মোহন চাকী, সাধারণ সম্পাদক মো. আসাদুজ্জামান মন্ডল আসাদ, অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. ফিরোজুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক তাপস কুমার গোস্বামী, কর্মচারী ইউনিয়নের সভপতি নুর আলম মিয়া, বিশ্ববিদালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পোমেল বড়ুয়া ও সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান শামীমসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। পরে ড. এম. এ. ওয়াজেদ মিয়ার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বাদ জুমা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৪২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার ফতেহপুর গ্রামে ওয়াজেদ মিয়া জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা আব্দুল কাদের মিয়া এবং মাতা ময়েজুন্নেসা। তিন বোন ও চার ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন সর্ব কনিষ্ঠ।
তিনি ১৯৫৬ সালে রংপুর জিলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং ১৯৫৮ সালে রাজশাহী সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। পরে ১৯৬২ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করে ১৯৬৩ সালে লাহোরের আণবিক শক্তি কমিশনে চাকরিতে যোগ দেন। ১৯৬৭ সালে লন্ডনের ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি লাভ করেন ডক্টরেট ডিগ্রি। একই বছরের ১৭ নভেম্বর তিনি বঙ্গবন্ধুকন্যা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিয়ে করেন।
১৯৭১ সালে এ দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং এর আগের ও পরের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তার উপস্থিতি ছিল উল্লেখযোগ্য। তিনি ১৯৯৯ সালে আণবিক শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে অবসর নেন। ২০০৯ সালের ৯ মে দীর্ঘদিন কিডনির সমস্যাসহ হৃদরোগ ও শ্বাসকষ্টে ভুগে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে ৬৭ বছর বয়সে তাঁর মৃত্যু হয়।