শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি
শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেন উদ্বোধনের তারিখ পিছিয়ে পঞ্চমবারে নির্ধারণ

আব্দুল লতিফ সরকার,আদিতমারী প্রতিনিধিঃ আন্তঃনগর বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেনটির উদ্বোধনের তারিখ পিছিয়ে পঞ্চমবারের মতো নির্ধারণ করা হয়েছে। এ মাসে ১৮  ফেব্রুয়ারি মাসে আরেক দফা উদ্বোধনের তারিখ নির্ধারণ করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু অনিশ্চয়তা যেন কাটছে না প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির এই আন্তঃনগর ট্রেনটির চলাচল নিয়ে। কয়েক বার তারিখ পেছোনোয় হতাশ লালমনিরহাট জেলাবাসী।

তথ্য সূত্র হতে জানা গেছে, ২০১১ সালের ১৯ অক্টোবর লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম-আঙ্গোরপোতা ও তিনবিঘা করিডোর পরিদর্শনে এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ অঞ্চলের লোকদের কথা ভেবে বুড়িমারী থেকে সরাসরি রাজধানী ঢাকায় চলাচলের জন্য একটি আন্তঃনগর ট্রেন চালুর প্রতিশ্রুতি দেন। পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ১৬ জুন তৎকালীন রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক লালমনিরহাটে এসে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া প্রতিশ্রুতি দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে’। এরপর ২০২১ সালের ১২ নভেম্বর সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন লালমনিরহাটে এসে বলেন, ‘বুড়িমারী-ঢাকা রুটে আন্তঃনগর ট্রেন দ্রুত চালু করা হবে।’

প্রতিশ্রুতি মতে, দেশের তৃতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর বুড়িমারী থেকে রাজধানী ঢাকা রুটে আন্তঃনগর ‘বুড়িমারী এক্সপ্রেস’ নামে একটি ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত নেয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে সূত্র জানায়, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেনটি চালুর অনুমোদন দেন। সে অনুযায়ী গত বছরের ৩০ নভেম্বর ট্রেনটি উদ্বোধনের উদ্যোগ নেয় কর্তৃপক্ষ। লালমনিরহাটে আনা হয় নির্ধারিত ইঞ্জিন, বগি। সম্পন্ন করা হয় ট্রায়াল রান। প্রস্তুত করা হয় কর্মকর্তা-কর্মচারীও। কিন্তু সেই তারিখ পিছিয়ে নির্ধারণ করা হয় ০৬ ডিসেম্বর। ওই দিনটিও পরিবর্তন করে আবার নতুন করে নির্ধারণ করা হয় ১৬ ডিসেম্বর। কিন্তু সেই তারিখেও উদ্বোধন করা হয়নি ট্রেনটি। এরপর তারিখ পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছিল চলতি বছরের ০১ জানুয়ারি। কিন্তু সে তারিখেও উদ্বোধন না হওয়ায় ক্ষুব্ধ জেলার সাধারণ মানুষ। সবশেষ চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের ১৮ তারিখে ট্রেনটি চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

রেলওয়ের একটি সূত্র জানান, আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা পরিদর্শনের কথা রয়েছে নতুন রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিমের। এর পর দিনই বুড়িমারী থেকে এই ট্রেন উদ্বোধনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তবে ট্রেনটির বগি সংকট থাকায় আপাতত সপ্তাহে তিন দিন চলাচল করবে। এ নিয়ে মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) কেন্দ্রীয় রেল ভবনে একটি সভার মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের সিদ্ধান্তে একটি পরিপত্র জারি করার কথা রয়েছে। পরিপত্র জারি হলে এই আন্তঃনগর ট্রেনটি চলাচলে আর কোনো বাধা থাকবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে আজ সেই পরিপত্র জারি হবে কি না তা নিশ্চিত করে বলতে পারেনি রেলওয়ের লালমনিরহাট বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (ডিসিও) আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন।

তিনি বলেন, ‘বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেন চালুর ব্যাপারে বার বার মৌখিক ভাবে প্রস্তুতির কথা বলা হয়েছিল, কিন্তু লিখিত কোনো নির্দেশ কখনই আসেনি। রেলওয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই কয়েকবার উদ্বোধনের তারিখ পেছানো হয়েছে। ট্রেনটি চালুর ব্যাপারে এবারেও মৌখিক ভাবে জানানো হয়েছে, তবে সরকারি কোনো আদেশ লিখিত ভাবে আসেনি। তাই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না কবে চালু হবে’।

এবিষয়ে বুড়িমারী স্থলবন্দরে ব্যবসায়ীরা বলেছেন ‘বুড়িমারী স্থলবন্দর দেশের তৃতীয় স্থলবন্দর। এই বন্দর দিয়ে বাংলাদেশ-ভারত-নেপাল ও ভুটানে প্রতিদিন শত শত পাসপোর্টধারী যাত্রী ও ব্যবসায়ীরা যাতায়াত করেন। বুড়িমারী থেকে ঢাকা সরাসরিড় ট্রেনটি চালু হলে পাসপোর্টধারী যাত্রী ও ব্যবসায়ীরা সড়ক পথে ভোগান্তির অবসান ঘটবে এবং যাতায়াতের পথ সুগম হবে তাই প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে এই ট্রেনটি দ্রুত চালুর দাবি জানিয়েছেন তারা।

সম্পর্কিত