শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি
শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

বিজয় দিবসে বেরোবিতে উপাচার্যের অনুষ্ঠান বর্জন কর্মকর্তা-কর্মচারী সংগঠনগুলোর

ক্যাম্পাস প্রতিনিধি, বেরোবি:

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুরে (বেরোবি) বিজয় দিবসে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হাসিবুর রশীদের সকল অনুষ্ঠান বর্জন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী সংগঠনগুলো। উপাচার্য কোনো কথা দিয়ে কথা রাখেন না বলে অভিযোগ করে আজ তাঁরা এ সিদ্ধান্ত নেন বলে জানা গেছে।

আজ (১৬ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবস ২০২৩ উপলক্ষে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির আয়োজন করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এগুলোর মধ্যে সকাল সোয়া ৯টায় বিজয় শোভাযাত্রা, সাড়ে ৯টায় স্বাধীনতা স্মারকে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ, সকাল ১১টায় ভার্চুয়াল আলোচনা সভা, বেলা সাড়ে ১২টায় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং বিকেলে পুরষ্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কিন্তু এগুলোর কোনোটিতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হাসিবুর রশীদের সাথে অংশ নেননি বেরোবি অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন, তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন, পরিবহনপুল কর্মচারী ইউনিয়ন ও কর্মচারী ইউনিয়নের সদস্যরা।

আজ সকালে শোভাযাত্রা ও শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের অনুষ্ঠানের সময় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দকে ক্যাম্পাসের অন্যত্র অবস্থান করতে দেখা যায়। পরে স্বাধীনতা স্মারকে উপাচার্য কর্মসূচি শেষ করে চলে যাওয়ার পর ওই সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পন করা হয়। সকাল ১১টায় ভার্চুয়াল আলোচনা অনুষ্ঠানেও তাঁরা যোগ দেননি।

অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এটিজিএম গোলাম ফিরোজ বলেন, আমরা দীর্ঘদিন থেকে লক্ষ করছি আইন অনুযায়ী এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা এমনকি কর্মচারীদের জন্য কোনো কিছুই করা হয় না। অনুষ্ঠানগুলোতে রেজিষ্ট্রারের জন্যও প্রটোকল অনুযায়ী কোনো ব্যবস্থা করে না প্রশাসন। অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাথে উপাচার্য নানা সময়ে বিভিন্ন আশ্বাস দেন কিন্তু সে অনুযায়ী কিছুই করেন না। এজন্য সিন্ডিকেট সভাতে এর কোনো প্রতিফলন দেখতে পাই না আমরা। এমতাবস্থায় আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি এই প্রশাসনের সাথে কোনো অনুষ্ঠানে আমরা যাব না। প্রশাসন বিজয় দিবসের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করার পর আমরা নিজেরা কর্মসূচি পালন করবো। এছাড়াও এসব অনুষ্ঠানে অর্থ খরচের বিষয়েও প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, এসব অনুষ্ঠানের জন্য যেসকল কমিটি হয় সেগুলোর খরচের বিষয়েও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কিছু জানেন না।
তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাহাবুবুর রহমান বাবু বলেন, এই প্রতিষ্ঠানে সকলের চাওয়া-পাওয়া পূর্ণ হয় কিন্তু কর্মচারীদের কোনো চাওয়া পূরণ হয় না। সর্বশেষ গতকাল (১৫ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের দাবি আপগ্রেডেশন নীতিমালা পাস হওয়ার কথা থাকলেও উপাচার্য মহোদয় সেটাও করেননি। এর প্রতিবাদে আজকের অনুষ্ঠানে উপাচার্যের সাথে না গিয়ে আমরা তৃতীয় শ্রেণি অ্যাসোসিয়েশন, পরিবহনপুল কর্মচারী ইউনিয়নসহ কর্মচারী ইউনিয়নের পক্ষ থেকে আলাদাভাবে বিজয় দিবসের শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ ছাড়াও কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ নুর আলম মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক জমশেদ আলম হিরু এ প্রসঙ্গে বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীরা সব সময় বৈষম্যের শিকার। এখানে সবাই শিক্ষিত মানুষ, এরপরেও স্বাধীনতার দিনে আমাদের স্বাধীনতা খর্ব করা হচ্ছে।

এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ হাসিবুর রশীদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

এদিকে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য স্বাধীনতা স্মারক চত্বরে মঞ্চ ও প্যান্ডেল তৈরি করা হলেও ভার্চুয়াল আলোচনা সভার আয়োজন করায় সমালোচনা করেছেন অনেকে। এ বিষয়ে বিজয় দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক কমলেশ চন্দ্র রায়ের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে, পরে যোগাযোগ করতে বলে ফোন কেটে দেন।

সম্পর্কিত

মাত্রই প্রকাশিত