বুধবার, ২৬শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে রমজান, ১৪৪৬ হিজরি
বুধবার, ২৬শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

বালিয়াকান্দিতে চুনের”গুনে- স্বাবলম্বী দুই ভাই

মোঃ নুরুল ইসলাম বালিয়াকান্দি ( রাজবাড়ী) প্রতিনিধি ঃপান খাইতে চুন লাগে, ভালোবাসতে গুণ লাগে…’। আর সেই চুনের ‘গুণে’ স্বাবলম্বী হয়েছেন রাজবাড়ীর দুই ভাই স্বপন রায় ও মানিক রায়। তাদের কারখানার চুন সরবরাহ হচ্ছে সারাদেশে।

দীর্ঘদিন ধরেই বালিয়াকান্দি উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের নলিয়া গ্রামের স্বপন রায় চুন তৈরি করে আসছেন। তার ছোটভাই মানিক রায়ও দুই বছর আগে চুন তৈরির নতুন কারখানা করেছেন। তাদের দুটি কারখানার তৈরি চুন রাজবাড়ী ছাড়াও মাগুরা, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মাদারীপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে। পাইকারি প্রতি কেজি চুন ১০ টাকা কেজি বিক্রি করছেন তারা।

সরেজমিন সোমবার সকালে চুন কারখানায় গিয়ে দেখা যায়, নারী ও পুরুষ শ্রমিকরা ঝিনুক ও শামুক মেশিনের মাধ্যমে গুঁড়া করে চুন তৈরি করে ৪০ কেজি করে প্যাকেট করছেন। চুন তৈরির কাজে নিয়োজিত নারীশ্রমিক মর্জিনা বেগম জানান, তারা পরিবারের কাজকর্ম শেষ করে এখানে চুন তৈরির কাজ করছেন। এ কাজে প্রতিদিন চারশ টাকা পারিশ্রমিক পান। স্বামীর আয়ের পাশাপাশি চুন তৈরির কাজ করে এসেছে তার পরিবারে সচ্ছলতা। তার মতো অনেকেই এ কাজ করে বাড়তি আয় করছেন।

আরেক শ্রমিক আবু বক্কর জানান, তিনিও নিয়মিত এ চুন কারখানায় কাজ করেন। এখানে কাজ করেই চলছে তার সংসার। দুটি বাড়িতে দুই ভাইয়ের চুন কারখানায় অন্তত ১০জনের কর্মসংস্থান হয়েছে। শ্রমিকদের পাশাপাশি চুন কারখানার মালিক ও তার স্ত্রীরাও এ কাজ করেন।

চুন কারখানার মালিক মানিক রায় বলেন, আমার ভাই স্বপন রায় দীর্ঘদিন ধরে চুন তৈরি ও বিক্রি করে আসছিলেন। ভাইকে দেখে এবং চাহিদা থাকায় আমিও দুই বছর আগে চুন তৈরির কারখানা দেই। আমরা খুলনা এলাকা থেকে ঝিনুক ও শামার (শামুক) কিনে এনে চুন তৈরি করি। আমার কারখানায় চার জন শ্রমিকসহ আমরা স্বামী-স্ত্রী কাজ করি। এতে প্রতি সপ্তাহে ৪০ কেজির ২শ বস্তা চুন উৎপাদন হয়। প্রতি কেজি চুন ১০ টাকা দরে বিক্রি করছি। আমাদের চুন যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়।

মানিক রায় আরও বলেন, পুঁজির অভাবে আমরা ছোট পরিসরে চুন তৈরি করছি। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে ব্যবসার পরিধি আরও বাড়ানো সম্ভব।

আরেক ভাই মালিক স্বপন রায় বলেন, দীর্ঘদিন ধরে চুন তৈরি করে আসছি। চুনের চাহিদা থাকার কারণে লোকবল বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু পুঁজি স্বল্পতার কারণে আমার ব্যবসা এক জায়গায় থমকে আছে। সরকারি সহযোগিতা পেলে চুন তৈরির কারখানা আরও সম্প্রসারণ করে বেকার সমস্যা কিছুটা হলেও দূর করা সম্ভব।

এ ব্যাপারে বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল ইসলাম বলেন, নিয়মানুযায়ী ঋণ পেতে কোনো সহযোগিতা লাগলে আমরা করব। এ ছাড়া সরকারিভাবে কোনো সুযোগ আসলে তাদের সহযোগিতা করা হবে।

সম্পর্কিত