মার্চ ২৩, ২০২৩ ১১:৫২ বিকাল



ফেইসবুকে পোস্ট দেখে ত্রান নিয়ে হাজির রাজারহাটের ইউএনও

মো: রোস্তম আলী। রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট একটি দরিদ্র প্রবণ জনপদ। এমনিতেই দারিদ্রতা তাতেই আবার করোনার প্রকোপ। করোনা প্রতিরোধে রাজারহাট জুড়ে রয়েছে প্রশাসনিক বিধি নিষেধ। বিধি নিষেধ মানতে সকল স্তরের মানুষ যখন বাসায় অবস্থান করতেছে ঠিক তখনি বিপাকে পড়ে যায় খেটে খাওয়া, হতদরিদ্র শ্রমজীবি মানুষ। না খেয়েই জীবন ধারন করাটা যেন নিত্যদিনের ‍রুটিন হয়ে গিয়েছে তাদের। কিন্তু এভাবে আর কতদিন? অনেকে লজ্জায় বলতে পারে না কাউকে। সরকারীভাবে ত্রান আসলেও তা যেন গরীবের ক্ষুধার জ্বালার কাছে যেন কিছুই না।

প্রতিটি হতদরিদ্র যখন নিরাশ হয়ে মৃত্যু নাম জপছিল, ঠিক তখনি রাজারহাটের ইউএনও তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সরকারী ত্রানসহ, নিজস্ব তহবিল হতে কয়েকদিনের খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছিল। তবুও তিনি থেমে নেই। সাধ্যমত ত্রান সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন তিনি।

তারই ধারাবাহিকতায় গত রাত রবিবার (০৫/০৪/২০২০ ইং) Ali Bokash নামক জনৈক ব্যক্তির ফেইসবুক পোস্ট দেখে বসে থাকতে পারেনি রাজারহাট উপজেলার ইউএনও মো: যোবায়ের হোসেন। ফেইসবুক পোস্ট দেখে এক ঘন্টার মধ্যেই ত্রান নিয়ে হাজির রাজারহাট উপজেলার নাজিমখাঁন ইউনিয়নের কালিরহাট গ্রামের নেংলা কাদের নামক ঐ ব্যক্তির বাড়িতে। তাকে সরকারি সহায়তা বাবদ ১০ কেজি চাল এবং ব্যক্তিগতভাবে ২০০ টাকা প্রদান করা হয়।

৩৫-৪০ বছর আগে এক দূর্ঘটনায় এক পা হারান নেংলা কাদের। তিনি অতি কষ্টে ভিক্ষা বৃত্তি করে পাঁচ সন্তান ও স্ত্রী নিয়ে জীবন যাপন করে তিন মেয়ের বিবাহ দিয়াছেন এবং বর্তমানে দুই মেয়ে ফাজিল এ অধ্যয়নরত। অনেক দিন ভিক্ষা করে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে! এই ভিক্ষাবৃত্তি লজ্জাকর এবং মেয়েরা ও কেমন যেন করে, তাই সে গন্য মান্য ব্যাক্তিবর্গের সহযোগীতায়, কালীর হাট বাজারে একটি পানের দোকান এবং বিস্কুটের দোকান দেন। এর থেকে যা আয় হয়, তা দিয়ে কোন রকমে সংসার চালান। বর্তমানে দেশে এই করোনা ভাইরাসের কারনে দীর্ঘদিন ধরে দোকান বন্ধ। বর্তমানে সে  ভীক্ষাও করতে  পারেন না বয়সের কারনে। তার পরিবার পরিজন নিয়ে অতি কষ্টে জীবন চলছে! লজ্জায় কাউকে পারতেছেনা বলতে !

রাজারহাট উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: যোবায়ের হোসেন জানান, আল্লাহ্ আমাকে যতদিন শক্তি এবং সামর্থ দিবে ততদিন জনগনের সেবা করে যাবো। তবে আমাকে খুব কষ্ট করে একাই সব সামলাতে হয়। আমি সকল ইউনিয়ন পরিষদে ত্রান বিতরন মনিটরিং করতে যাই যেন সত্যিকার অর্থেই দুস্থ্য জনগণ পায়। কিন্তু মাঝে মধ্যে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারীদেরকে পাই না। এ জন্য কষ্ট হয় তবুও বিবেক বোধের জায়গা থেকে একাই সকল কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকি।

 



Comments are closed.

      আরও নিউজ