এবিএস রতন নওগাঁ প্রতিনিধি : এক সময়ে বাউল গানে স্টেজ কাঁপানো শো, অ্যালবাম প্রকাশ, গান ভালোবেসে পথে-প্রান্তরে ছুটে বেড়িয়ে নিজের কন্ঠে শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছেন রিংকু, কিন্তু এখন পুরোপুরি অবসর। রিংকুর নেই আগের মত কোনো ব্যস্ততা।
ক্লোজআপ ওয়ান প্রতিযোগিতায় লোকগান ও বাউলগান গেয়ে আলোচনায় এসেছিলেন রিংকু। ছিলেন সেরা পাঁচে। লালনের ‘এসব দেখি কানার হাটবাজার’ গেয়ে সবাইকে মুগ্ধ করেন রিংকু। প্রতিযোগিতা শেষে প্রকাশ করেন ‘পাগলা ঘণ্টা’, ‘বাউল মন’ ও ‘জগৎ বন্ধু’ নামের তিন টি অডিও অ্যালবাম। প্রতিটি অ্যালবামই শ্রোতাদের মন জয় করে। লালনের গান এবং সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা লোকগান সংগ্রহে কাজ করেন রিংকু।
অসুস্থ হওয়ার কারণে গানের জগৎ থেকে এখন দূরেই রয়েছেন এই শিল্পী। ২০১৬ সালে ইতালিতে শো করার সময় প্রথমবার স্ট্রোক করেন। এরপর দেশে এসে চিকিৎসা নিয়ে গানে ফিরেছিলেন। কিন্তু ২০১৮ সালে আবারও স্ট্রোক করেন। এরপর ২০২০ সালে পরপর দুইবার স্ট্রোক করেছেন।
নওগাঁর আত্রাই উপজেলার বড় সাওতা গ্রামের মহসীন আলী মৃধার ছেলে মশিউর রহমান রিংকু। ২০০৫ সালে ক্লোজআপ ওয়ান সংগীত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে তিনি নজর কাড়েন দেশজুড়ে, এমনকি জায়গা করে নিয়েছিলেন সেরা পাঁচে। তাঁর কণ্ঠে লোকগান ও বাউলগান শ্রোতামহলে ব্যাপক জনপ্রিয়। বর্তমানে আগের চেয়ে কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠেছেন রিংকু। আবারও ফিরতে চান গানের ভু্বনে।
রিংকু বললেন, ‘আগের থেকে শারীরিকভাবে কিছুটা সুস্থ হয়েছি, চলাফেরা করতে পারছি। তবে গানে কবে ফিরতে পারব, জানি না। গান গাওয়ার মতো সুস্থ হইনি। যদি পুরোপুরি সুস্থ হতে পারি গানে ফিরব
তিনি বলেন, একটা সময় স্টেজ মাতিয়েছি। নতুন নতুন গান করেছি। কিন্তু এখন সব বন্ধ। আমাকে অনেকেই ডাকেন গানের জন্য। কিন্তু এ অবস্থায় গাইতে পারি না বলে প্রোগ্রাম হাতে নেই না।
আবারও গানে ফেরার ইচ্ছে প্রকাশ করে রিংকু বলেন, আমি যে গানগুলো গেয়েছি, আমার কণ্ঠের গান যারা পছন্দ করেন-তারা সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন, যাতে আগের মতো গাইতে পারি। কিন্তু আগের মতো গাওয়া সম্ভব নয়, তারপরও চেষ্টা করব।
রিংকুর কণ্ঠে বাউল মন অ্যালবামের ‘নারী হয় লজ্জাতে লাল’ গানটি জনপ্রিয়তা পায়। সেসময়ে এটি ছড়িয়ে পড়েছিল দেশজুড়ে।
স্থানীয় এলাকাবাসীদের ও শ্রোতাদের সাথে কথা হলে তারা জানান, যদি এই গুনী শিল্পীকে বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসা করানো যেত, তাহলে সুস্থ হয়ে উঠতেন তিনি, এবং আবারো গানের জগতে ফিরতেন রিংকু।