এ দপ্তরটি দুর্নীতি আতুর ঘর হওয়া এবং দুই হতে চারজন ব্যবসায়ি সেন্ডিকেট এর কারণে সাধারন কৃষকগণ আর খাদ্য গুদামে যায় না। ব্যবসায়িরা সাধারণ কৃষকদের নাম ও কৃষি কার্ড ব্যবহার করে অনলাইনে আবেদন করতঃ তালিকা ভুক্ত হয় এরপর ব্যবসায়িরা কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে এসব ধান সংগ্রহে সুবিধা ভোগ করেন। এছাড়াও মিলারগণ দুইজন চিহিৃন্ত ব্যবসায়ির নিকট মিলের অংশদারি বিক্রি করায় তারা বিভিন্ন সময় , উপজেলার সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের মালামাল না তুলে সমন্বয় করে, সরকারের বরাদ্দে খাদ্য সরকারের নিকট উচিৎ মুল্যে বিক্রি করে সুবিধা গ্রহন করেন এ সকল ব্যবসায়ি ও কর্মকর্তাগণ। সকল সময় খাদ্য গুদামে শুধু খাতা কলমে মালামাল সংরক্ষিত থাকে বাস্তবে খাদ্য গুদামে মালামাল হিসাবের চেয়ে কম থাকে এবং চাল ,গম পরিবর্তন না হওয়ায় একই চাল ও গম বার বার জমা উত্তোলন করায় চাল ও গম এর মান নষ্ট হয়ে যায়। গুদামে রক্ষিত খাদ্যদের বস্তা গুলোতে হতে বোঙ্গা মেরে প্রতিবস্তা হতে ২ হতে ৩ কেজি চাল বের করে নেওয়া হয়। যাতে জড়িত থাকে খোদ খাদ্য কর্মকর্তা,কর্মচারি, শ্রমিক সর্দ্দারের নেতৃত্বে কয়েকজন শ্রমিক। এছাড়া খাদ্য গুদামের পরিবর্তে এসকল ব্যবসায়িদের ঘর হতে নিম্ন মানের খাদ্য পাঠানো হয় বরাদ্দ প্রাপ্ত সুবিধাভোগীদের হাতে। বরাদ্দে এসকল খাদ্য পাঠানো হয় চিহিৃন্ত এক ব্যবসায়ির ট্রাক্টরে ও মনোনীত যানবাহনে। যার সুবিধা গ্রহন করেন প্রকল্পের ও বারদ্দে দায়িত্বপ্রাপ্তরা,লেবার সর্দ্দার ও লেবার। গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার খাদ্য গুদামে প্রতিবছর খোদ দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারি, ব্যবসায়ি চক্র ও লেবার শ্রমিকদের যোগসাজসে হয় চুরি ও আত্মসাৎ। গত বছর আড়াই শত টন চাল ও প্রায় ৮৫ হাজার খালি বস্তা আত্মাসাৎ করে পূরুন করে কর্মকর্তার চাকুরী বহাল হলেও এবছর আরেক কর্মকর্তা প্রায় দেড় শতাধিক টনের মতো চাল ও গম আত্মসাৎ করে গা ঢাকা দিয়েছেন বলে উপজেলা জুড়ে টক অব দ্যা টাউনে পরিণত হয়েছে। চিহিৃন্ত সেই সেন্ডিকেট চক্রের মুল হোতা ব্যবসায়িরা বর্তমানে নিজেদের অপরাধ ঢাকতে খাদ্য গুদাম কর্মকর্তাদের নিকট প্রায় দুইশত টন চালের বিল পাবেন বলে গুজব চালিয়ে যাচ্ছেন। অপরদিকে প্রায় দেড় শতাধিক টন চাল ও অর্ধশত টন গম আত্মসাৎ করে গা ঢাকা দিয়েছেন পলাশবাড়ী খাদ্য গুদাম এর পলাশবাড়ী খাদ্য পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন ছিদ্দিকি।
খাদ্য গুদাম এর কর্মচারী সূত্রে জানা যায়, খাদ্য অধিদপ্তরের এক পরিপত্রে পলাশবাড়ী খাদ্য গুদাম এর খাদ্য পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন ছিদ্দিকি কে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি পরিলক্ষিত হওয়ায় স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে বলে অফিস ও স্ট্যাফ সূত্রে জানা যায়। এ আদেশের প্রেক্ষিতে খাদ্য গুদামে সরকারি সংরক্ষিত চাল , ধান , গম ও নিজ দায়িত্ব হস্তান্তর না করে গা ঢাকা দিয়েছেন খাদ্য পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন ছিদ্দিকি।
নিয়মিত পাক্ষিক পরিদর্শন করেন দাবী করে এ বিষয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ নাজমুল হক জানান,কর্মকর্তার বদলি হলেও তিনি দায়িত্ব হস্তান্তর না করে গা ঢাকা দিয়েছেন। চাল,গম ঘাটতি থাকার বিষয়টি ও উক্ত ঘটনায় মামলা বা বিভাগীয় মামলার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি উক্ত ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির নিকট জানতে পরামর্শ প্রদান করেন। তিনি আরো দাবী করেন খাদ্য নিয়ন্ত্রক হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি নিয়মিত পাক্ষিক খাদ্য গুদাম পরিদর্শন ও প্রতিবেদন দিয়েছেন সে সময় তিনি সব মালামাল সঠিক ভাবে হিসাব পেয়েছেন।
তবে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রন কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, এঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে কিছু খাদ্য কম পাওয়া যায়। এবং কর্মকর্তা অন্যত্র বদলি হয়েছে এবং নতুন একজন কে খাদ্য গুদামে প্রেরণ করা হয়েছে। এখন খাদ্য গুদামের কাজ স্বাভাবিক ভাবে পরিচালিত হচ্ছে। গঠিত তদন্ত কমিটির এ প্রতিবেদনের আলোকে অভিযুক্ত কর্মকর্তাসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের ও বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
এবিষয়ে পলাশবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ কেএম আজমিরুজ্জামান জানান, অভিযোগ পেয়ে দুদকে প্রেরণ করা হয়েছে। দুদক তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট আইনে ব্যবস্থা নিবেন।
পলাশবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ কামরুল হাসান জানান, খাদ্য গুদাম কর্মকর্তার বদলি হয়েছে বলে তিনি জানতে পারেন। তবে দায়িত্ব হস্তান্তর করেছেন কিনা সেটা তার জানা নেই। তদন্ত কমিটি গঠন ও মামলা দায়ের বিষয়টিও নিশ্চত নয় এ কর্মকর্তা। এবং কতটুকু মালামাল আত্মসাৎ করা হয়েছে সে বিষয়ে তিনি জানেন না বলে জানিয়েছেন।
অপরদিকে খাদ্য গুদামের চাল, গম, ধান ও খালি বস্তার হিসাব করতে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তার অফিস হতে একটি টিম খাদ্য গুদামের হিসাব নিতে কয়েকদিন অপেক্ষা করার পর অভিযুক্ত খাদ্য পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন ছিদ্দিকি তদন্ত কমিটির নিকট না আসায় তদন্ত কমিটি একজন নির্বাহী ম্যাজিস্টেট এর উপস্থিতিতে মালামাল হিসাব নিকাশ করে খাদ্য গুদাম গুলো সিলগালা করে দিয়েছেন। এরপর তদন্ত কমিটির প্রাপ্ত হিসাব নিকাশ অনুযায়ী নতুন একজন খাদ্য পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসাবে যোগদান করে খাদ্য গুদামের কাজ কর্ম চলমান রেখেছেন। দ্বিতীয় পর্বে থাকছে কি ভাবে খাদ্য গুদাম মিলার ও কৃষক শুন্য হলো ,ঠিকাদারের নিয়ন্ত্রনে থাকা লেবার শ্রমিকের হাতে কি ভাবে জিম্মি থাকে খাদ্য গুদাম ও কর্মকর্তারা। দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা ও জড়িত ব্যক্তিদের ভালো মানুষের মুখোশে সমাজে তাদের অবস্থান ও অপরাধের পরিমাণ।