পঞ্চগড়ে পুরাতন সেতু ভেঙে ফেলায় নদী পারাপারে দূর্ভোগ, বেইলী ব্রিজ নির্মানের দাবিতে মানববন্ধন

বিমল কুমার রায়, পঞ্চগড় প্রতিনিধি:

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে পামুলী ইউনিয়নের ভুল্লী নদীর পুরাতন ব্রিজ ভেঙে নতুন ব্রিজের কাজ শুরু হলেও নেই নদী পারাপারের জন্য কোন অস্থায়ী বেইলী ব্রিজ। নির্মিতব্য নতুন সেতুর পাশে নদী পারাপারের জন্য বেইলী ব্রীজ নির্মানের দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) দুপুর ২টায় উপজেলার পামুলী ইউনিয়ন এর লক্ষীর হাট- পামুলী শান্তির হাট সড়কের ভুল্লীপাড়া এলাকার ভুল্লী নদী তীর সংলগ্ন এলাকায় অন্তত দুই শতাধিক এলাকাবাসী এই মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সম্প্রতি ভুল্লী নদীতে সেতু নির্মাণের জন্য পুরনো লোহার সেতুটি দরপত্রের মাধ্যমে ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। নতুন সেতুর কাজ শুরু হলেও চলাচলের জন্য অস্থায়ী ব্রীজ নির্মান করা হয় নি। যার ফলে দেবীডুবা ইউনিয়ন ও পামুলী ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ চরম দূর্ভোগে পড়েছে।

নদী পারাপারে বেইলি ব্রীজ না থাকায় কৃষিপণ্য পরিবহন সমস্যায় কৃষকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ দেখা গেছে। পাশ্ববর্তী লক্ষীর হাট ও শান্তির হাটে এ এলাকার কৃষকেরা কৃষি পন্য বিক্রয়ের ক্ষেত্রে মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নদী পারাপারে সমস্যা থাকায় বাইরের ব্যবসায়ীরা পন্য ক্রয় করতে এলাকায় আসতে পারছে না৷ স্থানীয় ভাবে ভ্যানের মাধ্যমে পন্য পরিবহনের সময় একাধিক বার ভ্যান উল্টে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।

বক্তারা অভিযোগ করেন, প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে সেতু নির্মাণে। দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে এখানে ঠিকাদারের বেইলী ব্রীজ নির্মাণ করা উচিত ছিল। কিন্তু সেখানে দায়সারা ভাবে মাটি দিয়ে ডাইভারশন রাস্তা নির্মাণ করে দিয়েছে। সামনে বর্ষা মৌসুমে এই রাস্তাটিও ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

আগামী সাতদিনের মধ্যে বেইলী ব্রীজ নির্মাণ না করলে অনশন শুরুসহ সেতুর কাজ বন্ধ করার হুশিয়ারি দেন স্থানীয়রা।

এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, বৃহত্তর দিনাজপুর জেলা গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে ৪ কোটি ৫৮ লাখ ১৯ হাজার ১৬১ টাকায় ভুল্লী নদীর উপর ৫০ মিটার আরসিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। সাধারণ মানুষের যাতায়াতের জন্য প্রাক্কলনে ৫০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ২ ফুট প্রস্থের একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণের কথা বলা আছে। যাতে বরাদ্দ রয়েছে ২ লাখ ৩ হাজার টাকা।

জানা যায়, সেতু নির্মানের কাজটি পেয়েছে রাজশাহীর বরেন্দ্র কন্সট্রাকশন লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে কাজটির তদারকির দায়িত্বে আছেন জাহিদুজ্জামান রাসেল।

জাহিদুজ্জামান রাসেল বলেন, নতুন সেতু নির্মান প্রাক্কলনে বেইলী ব্রিজ নির্মানের কোন বরাদ্দ নেই, তবে কাঠের সাকো নির্মাণের বরাদ্দ রয়েছে। ইতিমধ্যে নদী পারাপারের জন্য ডাইভারশন রাস্তা তৈরি করে দেয়া হয়েছে এবং আসন্ন বর্ষা মৌসুমের জন্য কাঠের সাকো নির্মাণের প্রস্তুতি চলছে।

এছাড়াও মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপি’র সহ সভাপতি আইয়ুব আলী, সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন মো: তবারক হ্যাপি, দেবীডুবা ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি মজনু, পামুলী ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি আবুল বাশার প্রধানসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ প্রমুখ।