শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি
শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

নদী ভাঙ্গনে সর্বস্ব হারানো রেহানা খাতুন এখন স্বাবলম্বী

আদুরী আক্তার, পেস চেঞ্জ এজেন্ট, রেডিও চিলমারী:

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চর ইয়ুথনেটের বাসিন্দা রেহানা খাতুন(৩০)। ১২ বছর ধরে বসবাস করে আসছিলেন পাশের পোড়ার চরে। গত বছরের তীব্র নদী ভাঙ্গনে পুরো চরটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। ভিটেমাটি হারিয়ে শেষ হয়ে যায় একটি সাজানো সংসার। ভূমিহীন এই পরিবারটি আশ্রয় নেয় পাশের ইয়ুথনেট চরে। সেখানে স্বামীর আয় দিয়ে সংসার চলছিলোনা। রেহেনা খাতুন সেলাই মেশিন প্রশিক্ষণ নিয়ে শুরু করেন দর্জির কাজ। তাঁর আয় দিয়ে ফিরিয়ে আনছেন পরিবারের স্বচ্ছলতা। বিনামূল্যে সেলাইমেশিন দিয়ে তাঁর পাশে দাঁড়ায় জলবায়ু ও পরিবেশ বিষয়ক সংগঠন ইয়ুথনেট।

রেহেনা খাতুন বলেন, নদী ভাঙ্গনে আমার বাড়িঘর সব চলে যায় নদীতে। পরে আমি কি করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না। এই চরে এসে অন্যের জমি ভাড়া নিয়ে বাড়ি করি। আমার স্বামী কামলা দিয়ে যা আয় করে তা দিয়ে পরিবার চলে না। তাই আমি সেলাই মেশিনের কাজ শুরু করি। এখন আমি আমার স্বামীকে সাহায্য করছি। পরিবারে আর কোনো অভাব নেই।

রেহেনা খাতুনের পাশে দাঁড়ানো সংগঠন ইয়ুথনেট এর কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সমন্বয়ক সুজন মোহন্ত বলেন, রেহেনা খাতুন এর মত অনেক পরিবার প্রতিবছর সর্বস্ব হারায়। আমরা তাদের মত পরিবারগুলোকে নিরাপদ মাইগ্রেশনের জন্য সাহায্য করে আসছি। এখন তারা নিজেদের ভাগ্য বদল করেছে।

১৬ টি নদ-নদী ও ৫ শতাধিক চরের জেলা কুড়িগ্রাম। এই জেলায় প্রতিবছরেই একাধিকবার বন্যা ও নদী ভাঙ্গনের শিকার হয় হাজার হাজার পরিবার। বন্যায় ও নদী ভাঙ্গনে বাস্তুচ্যুত এসব পরিবার ঘুরে দাঁড়ানোর আগেই আবারও ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন বন্যা অথবা নদী ভাঙ্গনে।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে প্রতিবছর এই জেলায় একাধিকবার বন্যা হচ্ছে। বিশেষ করে অসময়ে বন্যার কবলে পড়তে হচ্ছে নদী এলাকার বাসীন্দাদের। এর ফলে এই জেলায় নদী ভাঙ্গনের মাত্রা আগের থেকে বেড়েছে। রেহানা খাতুনের মতো পরিবারগুলোকে নিরাপদ মাইগ্রেশানের আওতায় নিয়ে আসলে এই ক্ষতি কিছুটা হলেও লাঘব করা সম্ভব বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সম্পর্কিত