মার্চ ৩১, ২০২৩ ১২:৪৮ বিকাল



দুশ্চিন্তা ও আতঙ্কে হাওর পাড়ের কৃষক

উজ্জ্বল হাসান সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

একদিকে “হাওরের বোরো ফসল ঘরে তোলা নিয়ে সংশয়, অন্যদিকে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ” এই দুই নিয়ে দুশ্চিন্তা আর আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন তাহিরপুর উপজেলার হাওর পাড়ের শত-শত কৃষক পরিবার।

কৃষকের কঠোর পরিশ্রম আর শ্রম ঘামের একমাত্র ফসল এখনো হাওরে। হয়ত অল্প কয়দিনের মধ্যেই ঘরে উঠবে কৃষকের কষ্টার্জিত সোনালি ফসল।

কিন্তু সেই ফসল ঘরে তোলা নিয়ে সংশয় আর সাম্প্রতিক সময়ের করোনা ভাইরাস নিয়ে দুশ্চিন্তা আর আতঙ্ক যেন কাটছেই না হাওর পাড়ের কৃষকদের।

হাওর পাড়ের একাধিক কৃষক বলছেন, বিগত বছরগুলোতে অকাল বন্যা ও পাহাড়ি ঢলে হাওরের বাঁধ ভেঙে ফসল তলিয়ে যাওয়ার কথা মনে করেই আমরা অনেকটা দুশ্চিন্তায় আছি।
অন্যদিকে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ভয়ে এ বছর ধান কাটার শ্রমিক (স্থানীয় ভাষায় বেফারী) পাওয়া যাবে না। এ ছাড়া আমরা নিজেরাও সংঘবদ্ধভাবে ধান কাটতে পারব না করোনা আতঙ্কে। ফলে হাওরের ধান কিভাবে ঘরে উঠবে এ নিয়ে আমাদের চিন্তার শেষ নেই।

কৃষকের ঘরে ধান তোলা নিয়ে অনিশ্চয়তা অন্যদিকে করোনা ভাইরাস আতঙ্ক এ দুই নিয়ে যেন নিস্তব্ধ হাওর পাড়ের কৃষক পরিবারগুলো।

উপজেলা সদরের শনি হাওর পাড়ের কৃষক ও সাংবাদিক বাবরুল হাসান বাবলু জানান, করোনা আতঙ্কের কারনে এ বছর ধান কাটার শ্রমিক সংকট দেখা দিবে। এক্ষেত্রে কৃষি বিভাগ যদি শুরুতেই পর্যাপ্ত ধান কাটার মেশিন সরবরাহ করে রাখে তাহলে শ্রমিক সংকট কিছুটা দূর হবে।

উপজেলার শ্রীপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের গুরুমার হাওর পাড়ের কৃষক দেবাশীষ তালুকদার বলেন, ঘরে ধান তোলার আগ পর্যন্ত আমাদের দুশ্চিন্তা থাকবেই। গত বছর হাওরের বাঁধ ভেঙে কয়েক শতক জমির ধান আমার চোখের সামনেই তলিয়ে গেছে।

মাটয়ান হাওর পাড়ের কৃষকনেতা সাঞ্জব উস্তার বলেন, সাম্প্রতিক সময়ের করোনা ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে হাওর পাড়ের কৃষকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে । এই আতঙ্ক চলমান থাকলে কৃষকের ফসল ঘরে তোলা কঠিন হয়ে পড়বে।

তাহিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো : হাসান উদ দৌলা জানান, আমাদের কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে ৫০ পার্সেন্ট পরিশোধের মাধ্যমে ধান কাটার মেশিন দেওয়ার ব্যাবস্থা রয়েছে। তবে ধান কাটার শ্রমিক সংকট জটিল আকার দেখা দিলে বিষয়টি কতৃপক্ষকে অবহিত করে অন্যান্য ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিজেন ব্যানার্জী বলেন, কৃষকদের ধান ঘরে তোলার স্বার্থেই সরকার হাওরের ফসল রক্ষায় বাঁধ নির্মাণের জন্য কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। ইতিমধ্যে হাওরে বাঁধগুলোর নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। আশা করছি সুন্দরভাবেই কৃষক ঘরে ফসল তুলতে পারবে।



Comments are closed.

      আরও নিউজ