চিলমারী ফিরে দেখা হত্যাকারীদের ৪ জন গ্রেফতার বললেন এসপি মহিবুল ইসলাম।নৈশপ্রহরী হত্যায় জড়িতদের তালিকা পুলিশের হাতে।
আবু জাফর সোহেল রানা, কুড়িগ্রামঃ
তাং-৩০-০৩-২০২০খ্রীঃ।
কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশ নৈশপ্রহরী হত্যা, উদঘাটনে আরও একটি সফলতা অর্জন করলো। তিন মাস পর নৈশপ্রহরী এরশাদুল হকের হত্যা ও চুরির ঘটনার মুল আসামীদের মধ্যে চার জনকে গ্রেফতার করার কথা জানা যায়।
গত তিন মাস পুর্বে চিলমারী থানার জোড়গাছ নতুন বাজারে সংঘটিত দোকান চুরি ও নৈশপ্রহরী হত্যার ঘটনা মারাত্মক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। উল্লেখ্য গত ৫ই জানুয়ারী,রবিবার- ২০২০খ্রীষ্টাব্দে জোড়গাছ নয়াবাজারে গভীর রাতে নৈশপ্রহরী এরশাদুল হক(৫৫) কে শ্বাসরোধে হত্যা করে তিনটি দোকান চুরি করে দুর্বৃত্তরা। এ সময় তিন দোকান মিলে নগদ অর্থ সহ প্রায় ২৫ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায় বলে দোকানিরা অভিযোগ করে।
এদিকে পু্লিশ সূত্রে জানা যায়, নৈশ প্রহরি জোড়গাছ হত্যা ও তিনটি দোকানে সংঘবদ্ধ চুরি ঘটনাটি স্থানীয় ব্যবসায়ী মহল সহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলে দেয়। এ ঘটনার সময় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান বিপিএম জেলার বাহিরে অবস্থান করছিলেন।
এমতাবস্থায়, জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান বিপিএম ঢাকার সফর সংক্ষিপ্ত করে সরাসরি কুড়িগ্রাম এসেই চিলমারী জোড়গাছ নতুন বাজার দোকান ভিজিট সহ স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সাথে মতামত বিনিময় করেন।মৃত এরশাদুল হকের স্ত্রী, সন্তান ও পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলেন। দৃঢ়তার সাথে বলেন, এরশাদ পুলিশের ছায়া পুলিশ হিসেবে মানুষের সম্পদ ও জীবনের নিরাপত্তায় নিষ্ঠার সাথে কাজ করায়, দূর্বৃত্তরা তাকে হত্য করে। চিলমারী থানার অফিসার ইনচার্জ কে ঘটনাস্থল থেকে যা যা আলামত হিসেবে জব্দ তালিকায় নেয়া হয়েছে,তা তালা চাবি থেকে সকল তথ্যাদি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আল মাহমুদ হাসানের কাছে দিতে বলেন। এএসপি আল মাহমুদ হাসান এই মামলার তদন্ত কার্যক্রম পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খানের নির্দেশনায় তদন্ত কার্যক্রম করছিলেন।
৬ জানুয়ারী চিলমারী থানাধীন জোড়গাছ বাজারে খুনসহ ডাকাতি মামলাটি তদন্তকালে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান বিপিএম’র প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, উলিপুর সার্কেল আল মাহমুদ হাসানের নেতৃত্বে ডিবি কুড়িগ্রাম তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় মামলার ঘটনার সাথে জড়িতদের শনাক্ত ও আটক করা হয়। আটক কৃত আসামীরা হলেন, জামালপুর জেলার দেওয়ানগন্জ সোনাকুড়া নিবাসী আঃ ছালাম, কুড়িগ্রাম ফুলবাড়ি থানার খড়িবাড়ির রেজাউল হক ওরফে ভুট্টু, চিলমারী থানার সাতঘড়িয়া পাড়া এলাকার মোকসেদ আলী, ও খয়রাত হোসেন, খেওয়ার চর, রৌমারী, কুড়িগ্রাম।
চিলমারী থানা অফিসার ইনচার্জ আমিনুর রহমান বলেন, এস পি স্যারের দিক নির্দেশনা ও তড়িৎ যোগাযোগ স্থাপন, প্রযুক্তির সহায়তা প্রভৃতি সাপোর্ট গুলো নিয়ে গত তিন মাসের নিরলস তদন্ত শেষে চারদিন আগে ২৭-০৩-২০২০ইং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আল মাহমুদ হাসান স্যারের নেতৃত্বে চিলমারী, ফুলবাড়ী এবং জামালপুর জেলায় অভিযান পরিচালনা করে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের চারজন সদস্যকে গ্রেফতার করেন।
গ্রেফতারকৃতদের অধিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ও মামলার সুষ্ঠ তদন্তের স্বার্থে বিজ্ঞ আদালত রিমান্ড মন্জুর করেন।
পুলিশ রিমান্ডে থাকাকালীন তারা এই ডাকাতির সাথে মোট ১১ জন জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে, একজন ইতিপুর্বে অন্য মামলায় গ্রেফতার হয়ে ময়মনসিংহ জেলে আটক রয়েছে ।বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে
ধৃত আসামীদের তিনজন গতকাল ও আজ বিজ্ঞ আদালতে নিজেদের দোষ স্বীকার করে কাবি১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেছেন বলে জেলা পুলিশ সূত্রে জানানো হয়।
কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান বিপিএম জানান, ঘটনার আকস্মিকতায় ও হত্যা সহ চুরি বা ডাকাতির ঘটনায় দোকানের তালা খোলা ও তালা ভেঙ্গে ফেলা এবং বড় চুরি সংঘটিত করার উদ্দেশ্য নিয়ে নৈশপ্রহরী কে হত্যার বিষয়টি তদন্তকার্যক্রম ভিন্নদিকে নিয়ে কাজ শুরু করার পরামর্শ দেয়া হয়। ফেব্রুয়ারীর শেষ সপ্তাহ থেকে শুরু হওয়া করোনা ভাইরাস সংক্রমন প্রতিরোধে বিভিন্ন কার্যক্রমের পরেও চাঞ্চল্যকর ক্লু লেস এই মামলার তদন্ত কাজ, আসামী শনাক্ত ও গ্রেফতার সহ রুটিন ওয়ার্ক গুলো চালিয়ে যাচ্ছে জেলা পুলিশ কুড়িগ্রাম।