বিশ্ব ডেস্ক: পূর্ব আফ্রিকার জিবুতি উপকূলে নৌকাডুবিতে ৩৩ জন অভিবাসী প্রাণ হারিয়েছেন। হতাহতদের অধিকাংশ ইথিওপীয় বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) ইয়েমেন থেকে ৭৭ জন অধিবাসীকে নিয়ে ইথিওপিয়া যাওয়ার পথে নৌকাটি ডুবে যায় বলে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) বরাতে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৭৭ জন অভিবাসী নিয়ে ইয়েমেন থেকে একটি নৌকা ইথিওপিয়ার উদ্দেশে যাত্রা করে। তবে লোহিত সাগরের আফ্রিকা শৃঙ্গের দেশ জিবুতির উপকূলীয় এলাকায় পৌঁছালে নৌকাটি ডুবে যায় বলে জানান স্থানীয় মৎস্যজীবীরা। পরে তারা কোস্টগার্ডকে খবর দিলে তারা এসে ২০ জনকে জীবিত উদ্ধার করতে সক্ষম হন। এ ছাড়াও ৩৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে এখনও অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানা গেছে।
জিবুতির কোস্টগার্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইসে ইয়া জানান, ডুবে যাওয়া নৌকাটিতে যারা ছিলেন তারা ইয়েমেন থেকে দেশে ফিরে আসছিলেন। কারণ দেশের চেয়ে বিদেশে জীবনধারণ আরও কঠিন হয়ে উঠেছিল।
এ দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের জিবুতির উপকূলীয় শহর গোদোরিয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর জাতিসংঘষের অভিবাসন সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশনের (আইওএম) তত্ত্বাবধানে তাদেরকে ইথিওপিয়ায় প্রেরণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জিবুতিতে নিযুক্ত ইথিওপিয়ার রাষ্ট্রদূত বারহানু সেগায়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) অভিবাসীদের মৃত্যুর জন্য শোক প্রকাশ করে বলেছেন, জিবুতি থেকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে অবৈধ পন্থায় ভ্রমণ অত্যন্ত বিপজ্জনক এবং এতে করে ক্রমাগত আমাদের নাগরিকরা তাদের জীবন হারাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, স্থলবেষ্টিত আফ্রিকান দেশ ইথিওপিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরুর পর থেকে পালিয়ে আসা লোকেরা প্রায়শই জিবুতি এবং ইয়েমেনের মধ্য দিয়ে সৌদি আরব এবং তার বাইরের অন্যান্য অনেক দেশে ভালো জীবনযাপনের আশায় যেয়ে থাকেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ আবার আটকে যান ইয়েমেনে। আরব উপদ্বীপের এই দেশটিও যুদ্ধের কবলে রয়েছে বেশ কয়েক বছর।
এর আগে চলতি মাসেই একই জলপথে অভিবাসন প্রত্যাশীদের বহনকারী আরেকটি নৌকা ডুবে অন্তত ৩৮ জন ইথিওপীয়র মৃত্যু হয়। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার কর্মকর্তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, গত প্রায় ১০ বছরের মধ্যে এই জলপথে প্রায় এক হাজার মানুষের মৃত্যু অথবা নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়েছে।