জুন ৭, ২০২৩ ১২:৩৭ সকাল



জরাজীর্ণ ঘরে মানবেতর জীবনযাপন ফাতেমার , জোটেনি কোনো সরকারি সহায়তা

 

নুরনবী মিয়া, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: ১৫.১০.১৯
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে ফাতেমা বেগম নামের এক স্বামী পরিত্যক্তা নারী দীর্ঘ দিন যাবত মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তার জাতীয় পরিচয় পত্র অনুযায়ী বয়স ৪৯ হলেও চেহারাদৃষ্টে ষাটোর্ধ্ব বলে মনে হয়। তিনি উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের ৭ নং ওয়াডের বড়লই গ্রামের মৃত বাবু মিয়ার মেয়ে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় জরাজীর্ণ একটি একচালা ছোট্ট ঘরে ফাতেমা বেগমের বসবাস। সেখানেই দেখা মিললো বৃদ্ধপ্রায় ফাতেমার। ঘরের মাঝখানে বাঁধা একটি ছাগল, এক কোনায় আছে রান্নার চুলা, হাড়িপাতিল ও শোয়ার জন্য পাতানো রয়েছে একটি কাঠের চৌকি।

কথা বলে জানা গেল, দুই কুলে তার কেউই নাই। বিয়ের পর সন্তান না হওয়ার কারনে প্রায় ২৫ বছর আগে তার স্বামী তাকে ছেড়ে চলে যান। তারপর পিতার দেওয়া একখন্ড জমিতে মাথা গোঁজার ঠাই পেয়েছেন। অন্যের বাড়িতে কাজ-কাম করে খেয়ে না খেয়ে কোন রকমে দিন কাটে তার। যেকোনো মৌসুমেই চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় ফাতেমাকে। দিনে দিনে ঘরটা ভেঙ্গে যাচ্ছে। সামান্যতম বৃষ্টি হলেই চালার ছিদ্র দিয়ে ভেতরে পানি প্রবেশ করে।

তিনি কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, এতদিন আমার শরীর ভাল ছিল, মানুষের বাড়িতে কাজ-কাম করে দিন পার করতাম। এখন তো আর শরীর চলে না। ঠিকমত দু’বেলা দু’মুঠো ডাল-ভাত জোটাতে পারি না। থাকার ঘরই বা ঠিক করবো কিভাবে। বৃষ্টি হলেই বর্গা নেয়া এই ছাগলটাকে নিয়ে ঘরের এক কোনায় বসে রাত কাটাতে হয়।

এলাকাবাসীরা জানায়, অনেক দিন থেকে এই মহিলা খুব কষ্টে দিন পার করলেও অদৃশ্য কারনেই তিনি ভাতা ও সরকারি ঘর পাচ্ছেন না। তার চেয়ে হতদরিদ্র এ এলাকায় আর কেউ নেই। ফাতেমা বেগম ভাতা ও সরকারি ঘর পাওয়ার যোগ্য।

৭নং ওয়াডের ইউ পি সদস্য জনাব খৈমুদ্দিন চৌধুরীর কাছে ফাতেমার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলে, ফাতেমা এই এলাকার একজন অসহায় নারী। যত তারাতারি সম্ভব তার দুঃখ-দুর্দশা দুরীভূত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করবেন।
এ বিষয়ে বড়ভিটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খয়বর আলী বলেন, ফাতেমার বিষয়ে আগে আমার জানা ছিলো না। এখন জানলাম। ইউনিয়ন পরিষদে যোগাযোগ করলে কোনো ব্যবস্থা করে দেয়া হবে।



Comments are closed.

      আরও নিউজ