চিলমারীতে নৌকার মনোনয়ন পেতে ভোটের মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন একাধিক প্রার্থী

মিজানুর রহমান মিজান, স্টাফ রিপোর্টার: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুড়িগ্রামের চিলমারী, রৌমারী ও রাজিবপুর নিয়ে গঠিত ২৮ কুড়িগ্রাম-৪ আসনে দলীয়ভাবে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী একাধিক প্রার্থী। বিএনপি-জামাতসহ অন্যান্য দলের নেতা কর্মীরা সরকার পতনের দাবীতে আন্দোলনে ব্যস্ত থাকায় ভোটের মাঠে তাদের দেখা না গেলেও নানা কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে নৌকার মনোনয়ন পেতে ভোটের মাঠে দেখা যাচ্ছে একাধিক আওয়ামী লীগ নেতাকে।

মনোনয়ন প্রত্যাশির অনেকে এখন শুভেচ্ছা পোস্টার, লিফলেট ও জনসংযোগ নিয়ে ব্যাস্ত সময় পার করছেন। জনসমর্থন পেতে দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতিও। মনোনয়ন প্রত্যাশীদের অনেকে এখন ব্যস্ত  সময় পার করছেন ঢাকায় তদবির ও লবিংয়ে।

কুড়িগ্রাম-৪ (চিলমারী, রৌমারী ও রাজিবপুর) আসনে সর্বোচ্চ মনোনয়ন প্রত্যাশিদের মাঠে দেখা যাচ্ছে। সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরে নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন স্থানে করছেন সভা-সমাবেশ। জনসর্মন পেতে ঘুরছেন জনগনের দ্বারে দ্বারে।

২৮ কুড়িগ্রাম-৪ (চিলমারী,রৌমারী ও রাজিবপুর) আসনে ক্ষমতাসিন দল আওয়ামীলীগের মনোনয়ন টিকেট পেতে ১৬/১৭ জনের দৌড় ঝাঁপের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশীদের অনেকে শুভেচ্ছা ব্যানার,পোস্টার,ফেস্টুন,লিফলেট বিতরণ, জনসংযোগ ও দলীয় কর্মকান্ডে সরব উপস্থিতিসহ বিভিন্ন প্রকার সামাজিক কর্মকান্ডে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। অনেকে নৌকায় ভোট চেয়ে শুরু করেছেন এলাকায় গণসংযোগ।

তাদের মধ্যে-আসনটির বর্তমান সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো.জাকির হোসেন। তিনি জাতীয় পার্টির দূর্গ থেকে ৯ম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার বিজয় নিয়ে আসায় এবারেও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চান।

মনোনয়ন পেতে পোস্টার ও ব্যানার লাগিয়ে নিজের পরিচিত তুলে ধরছেন দলটির কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সদস্য, সুপ্রিম কোর্টের এ্যাডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর আলম।

আ’লীগ সমর্থিত স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ ও রমনা মডেল ইউনিয়ন আ’লীগ সদস্য ডা.ফারুকুল ইসলাম ফারুক। নৌকা মার্কার মনোনয়ন পেতে পোস্টার,লিফলেট বিতরণের পাশাপাশি বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরে নিজের পক্ষে জনসমর্থন নিতে দিনরাত জনসংযোগে ব্যাস্ত সময় পার করছেন তিনি।

ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আসা চিলমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ রহিমুজ্জামান সুমন দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ড চালিয়ে আসছেন।

সাবেক সাংসদ মরহুম সাদাকাত হোসেন ছক্কু মিয়া’র পুত্র রংপুর আইন কলেজের অধ্যক্ষ এ্যাডভোকেট সাজেদ হোসেন তাতা। ব্যানার,পোস্টার লাগিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসাবে নিজেকে তুলে ধরছেন তিনি।

জেলা আওয়ামীলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারন সম্পাদক এ্যাডভোকেট আমজাদ হোসেন। শুভেচ্ছা ব্যানার,পোস্টার সাটানোর পাশাপাশি নিজে মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসাবে বিভিন্নভাবে প্রচারনা চালাচ্ছেন।

রাজিবপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো.আকবর হোসেন হিরো। নৌকা মার্কায় ভোট চেয়ে প্রচারনা চালাচ্ছেন।

ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আসা আরেক নেতা চিলমারী উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও চিলমারী উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান আজাদ জামান। এই নেতাও হতে চান নৌকার মাঝি।

বিভিন্ন ব্যানার, ফেস্টুনে ভোটের মাঠে দেখা যাচ্ছে রাজিবপুর উপজেলা আ’লীগ সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা মো.আব্দুল হাই সরকার।

রৌমারী উপজেলার সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান বঙ্গবাসী।

কুড়িগ্রাম জেলা আ’লীগ সদস্য ও সাবেক রাজিবপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো.সফিউল আলম। কুড়িগ্রাম জেলা আ’লীগ সদস্য ও বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবী এডভোকেট মাসুম ইকবাল। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট বিপ্লব হাসান পলাশ। অধ্যক্ষ ফজলুল হক মনি তিনিও মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসাবে ব্যাপক প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও প্রচার প্রচারনায় হাজী মুরাদ লতিফসহ বেশ কয়েক জনের নাম শোনা যাচ্ছে।

দীর্ঘ দিন ধরে চিলমারী উপজেলা আ’লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক, বর্তমানে সাধারন সম্পাদক মোঃ রেজাউল করিম লিচু। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসন থেকে তিনিও মনোনয়ন প্রত্যাশি।

চিলমারী, রৌমারী ও রাজিবপুর এ তিন উপজেলা নিয়ে গঠিত ২৮ কুড়িগ্রাম-৪ আসন। ব্রহ্মপুত্র নদ দ্বারা বিচ্ছিন্ন এ আসনটির পশ্চিমে চিলমারী উপজেলা ও পূর্বে রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলা। নদ দ্বারা বিচ্ছিন্ন আসনটিতে চলছে প্রার্থীদের এপার-ওপার খেলা। নৌকার মাঝি হওয়ার জন্য নিজের প্রার্থীতা জানান দিতে মাঠে নেমেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের তিন উপজেলার মনোনয়ন প্রত্যাশীরা।