রবিবার, ২৬শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে রজব, ১৪৪৬ হিজরি
রবিবার, ২৬শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে রজব, ১৪৪৬ হিজরি

আগামীকাল চিলমারীতে অষ্টমী স্নান মেলা

মিজানুর রহমান মিজান, স্টাফ রিপোর্টার:
চিলমারীর ব্রহ্মপুত্র নদে আগামী কাল মঙ্গলবার শুরু হচ্ছে ৩দিন ব্যাপী হিন্দু সম্প্রদায়ের অষ্টমী স্নান মেলা।মেলা উপলক্ষে দু‘দিন আগ থেকে ব্রহ্মপুত্র নদের বালুর উপর তৈরী করা হয়েছে বিভিন্ন দোকানপাঠ, স্টল, বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা, টয়লেট।

ভোরে ‘হে ব্রহ্মপুত্র মহাভাগ শান্তুর্ণ কুলনন্দর্ন অমুঘা গর্ভ সম্ভুতো পাপষ লৌহিত্য মে হরো’ অর্থ্যাৎ ‘হে ব্রহ্মপুত্র মহাভাগত মোর পাপ মোচন করো’ মন্ত্র পড়তে পড়তে পূণ্যার্থীরা স্নান কার্য সম্পাদন করবেন।

প্রতি বছর শুক্লপক্ষের অষ্টমী তিথিতে কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে তিনদিন ব্যাপী হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঐতিহ্যবাহী অষ্টমী স্নান অনুষ্ঠিত হয়। ব্রহ্মপুত্র স্নান উপলক্ষ্যে গত তিন দিন পূর্ব থেকেই চিলমারীতে শুরু হয়েছে সাজ সাজ রব। দুর দুরান্ত থেকে ক্ষুদে ব্যবসায়ীরা চলে এসেছে চিলমারীতে।

উপজেলার চিলমারী নদীবন্দরের রমনা ঘাট থেকে শুরু হয়ে দক্ষিণে জোড়গাছ পর্যন্ত প্রায় ৩কিলোমিটার এলাকাব্যাপী বালুর উপর তৈরী হয়েছে হরেক রকম পণ্যের ষ্টল। আসা শুরু করেছে বাইস কোপ, সার্কাসসহ নানান ধরণের খেলনার দোকান। নদের উপকুল ধরে বসেছে বিভিন্ন রকমের দোকান পাট। মাটির তৈরী হাড়ি-পাতিল, থালা, বদনাসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পারিবারিক জিনিসপত্র তো আছেই। তার পাশাপাশি উঠেছে মাটির তৈরী বিভিন্ন দেব-দেবীর মুর্তি, পুতুল, বাঘ, আম, নৌকা ইত্যাদি। এ মেলায় মৃৎ শিল্প প্রাধান্য পেয়েছে দু’টি কারণে-প্রথমত; ধর্মীয় মতে মাটির দ্রব্যাদি ব্যবহার করতে হবে বলে, দ্বিতীয়ত; দুর-দুরান্ত থেকে যারা আসেন তারা হাড়ি পাতিল বহন করে আনা পছন্দ করেন না। এসব কারণে হিন্দু পুন্যার্থীরা যে দু‘তিন দিন ধর্মীয় কারণে চিলমারীতে অবস্থান করেন তারা অল্প পয়সায় মাটির বাসন কোসন কিনে তাদের প্রয়োজন মিটানোর পর ওগুলো ফেলে রেখেই চলে যান।

রণপাগলী সার্বজনীন পূজা মন্দিরের পুরহিত বুদ্ধদেব চক্রবর্তী জানান, কাল ভোর রাত ৪টা থেকে স্নান শুরু হবে। তবে মূল স্নান হবে ভোর ৪টা থেকে বিকেল ৪টা ৫৬ মিনিট পর্যন্ত। এবারের স্নান চলবে সারাদিনব্যাপী।

বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ, চিলমারী উপজেলা শাখার সভাপতি শচিন্দ্র নাথ বর্মন জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, চীনসহ অন্যান্য দেশের সনাতন ধর্মাবলম্বী পূণ্যার্থীগণ অষ্টমী স্নান মেলায় আসবেন। এবারও প্রায় ৫ লক্ষাধিক পূন্যার্থীর সমাগম হবে চিলমারী বন্দরের অষ্টমী স্নান মেলায়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মিনহাজুল ইসলাম জানান, সরকারীভাবে অষ্টমী স্নান মেলা স্থলে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন, বিশুদ্ধ পানীয় জলের জন্য নলকুপ স্থাপন, মহিলাদের কাপড় বদলানোর জন্য সরকারী, বেসরকারী ও এনজিওদের সহায়তায় ২শতাধিক তাবু থাকবে।

নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশ পুলিশ, র‌্যাব, আনসার ও ভিডিপির পর্যাপ্ত সদস্য মোতায়েন করাসহ ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে পুলিশী পাহারার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কাল বিকেলে জোড়গাছ বাজার, পরদিন কাঁচকোল বাজার, বালাবাড়ীহাট, রাণীগঞ্জ বাজার ও ফকিরেরহাটে মেলা বসবে।

সম্পর্কিত