রিপন মিয়া,গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ
গাইবান্ধা জেলায় আজ শনিবার করোনা ভাইরাসে নতুন করে আক্রান্ত হওয়ার কোন খবর পাওয়া যায়নি।তবে গত ২৪ ঘন্টায় ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার পর তাদের করোনা ভাইরাস সংক্রমনের কোন প্রমাণ না পাওয়ায় ১০ জনকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।এদিকে এখন পর্যন্ত আমেরিকা প্রবাসী দু’জনসহ তার সংস্পর্শে আসা আরও দু’জনসহ মোট ৪ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত।এর মধ্যে ৩ জন গাইবান্ধা জেলা সদর হাসপাতালের আইসোলেসন ও অপরজন সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আইসোলেসনে রয়েছে।জেলা শহরে ১শ’ শয্যার আইসোলেসন সেন্টার প্রস্তুত করা হয়েছে।
সিভিল সার্জন ডাঃ এবিএম আবু হানিফ জানান,আজ শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে বিদেশ ফেরত ১৬৩ ব্যক্তিকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।ঢাকা থেকে রক্ত পরীক্ষার ফলাফল না জানা পর্যন্ত সন্দেহজনক রোগীদের হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হচ্ছে।আজ শনিবার জেলা প্রশাসকের এক প্রেস রিলিজে জানা গেছে,এ পর্যন্ত জেলার ৭টি উপজেলা ও ৪টি পৌরসভায় ১৬ হাজার ৪শ’ দরিদ্র শ্রমজীবি কৃষক পরিবারের মধ্যে ১শ’ ৬০ মে. টন খাদ্য সামগ্রী ও ১৬ হাজার ৫শ’ পরিবারের মধ্যে ৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়। এছাড়া বিতরণের জন্য জেলা প্রশাসনের ত্রাণ ভান্ডারে ২শ’ ১ মে. টন খাদ্য সামগ্রী ২ লাখ ৬৫ হাজার টাকা মজুদ রয়েছে।
অপরদিকে গাইবান্ধা জেলায় মাত্র তিনদিনে প্রস্তুত হলো ১শ’ শয্যার মানসম্পন্ন একটি অস্থায়ী আইসোলেসন সেন্টার।করোনা ভাইরাস সংক্রামিতদের জরুরী ভিত্তিতে চিকিৎসা সহায়তায় গাইবান্ধা জেলার ধানঘড়াস্থ আনসার ও ভিডিপি প্রশিক্ষণ সেন্টারে মাত্র তিনদিনে ১শ’ শয্যার মানসম্পন্ন একটি অস্থায়ী আইসোলেসন সেন্টার প্রস্তুত করা হয়েছে।নদী ভাঙন কবলিত দরিদ্র পীড়িত সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের কথা চিন্তা করে করোনা ভাইরাসের এই দূর্যোগ মোকাবেলায় বিভিন্ন ধরণের সচেতনতামূলক কাজ করার পাশাপাশি তিনদিনে একটি উন্নতমানের আইসোলেসন সেন্টার প্রস্তুত করে মানবিকতার এক অনন্য ভূমিকা রেখেছে জেলার অন্যতম স্বেচ্ছসেবী সংগঠন এসকেএস ফাউন্ডেশন।
উল্লেখ্য,জেলা করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রন কমিটির উদ্যোগে ও এসকেএস ফাউন্ডেশনের নির্বাহী প্রধান রাসেল আহমেদ লিটনের নির্দেশনায় এবং সার্বিক ব্যবস্থাপনায় মাত্র ২৫ জন শ্রমিক ও এসকেএস ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা মিলে ৩ দিনেই আনসার ও ভিডিপির একটি ভবনে করোনা ভাইরাস সংক্রামিতদের চিকিৎসা সেবায় এই আইসোলেসন সেন্টারের সার্বিক কাজ সম্পন্ন হয়।এ বিষয়ে সংস্থাটির পাবলিক রিলেশন সমন্বয়কারী মো. আশরাফুল আলম জানান,অতি স্বল্প সময়ে প্রস্তুতকৃত এই আইসোলেসন সেন্টারে রোগী এবং ডাক্তারের আবাসন ব্যবস্থা, খাদ্য সরবরাহ,পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা,অনুকুল পরিবেশ বজায়সহ যাবতীয় ব্যবস্থাপনা করবে এসকেএস ফাউন্ডেশন। অন্যদিকে ওষুধ এবং চিকিৎসক সহায়তা দিবে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় এবং সার্বক্ষনিক তদারকিতে থাকবে জেলা প্রশাসন ও জেলা করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রন কমিটি। জানা গেছে,শুক্রবার প্রস্তুত করণের কাজ শেষ হয়েছে।
এব্যাপারে সিভিল সার্জন ডাঃ এবিএম আবু হানিফ, ডাঃ আ.খ.ম. আসাদুজ্জামান, গাইবান্ধা প্রেসক্লাবের সভাপতি কে.এম রেজাউল হক,সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর সাবু, এসকেএস ফাউন্ডেশনের সোস্যাল বিজনেস এর সমন্বয়কারি আবু সাঈদ সুমন, পাবলিক রিলেশন এন্ড কমিউনিকেশনের সমন্বয়কারি মো. আশরাফুল আলম পরিদর্শন করেন।আজ শনিবার জেলা প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে এই আইসোলেসন সেন্টারটি আনুষ্ঠানিকভাবে হস্থান্তর করা হয়।