শনিবার, ১৭ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৯শে জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি
শনিবার, ১৭ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৯শে জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

কাহালুতে শিং মাছচাষে সফল চাষী লোকমনের মৎস্য খামার পরিদর্শন করলেন ইউএনও

স্টাফ রিপোর্টারঃ

গতকাল বৃহস্পতিবার বগুড়ার কাহালু উপজেলার মালঞ্চা ইউনিয়নের ভালশুন লোহারপাড়া গ্রামে লোকমান হাকিম সওদাগর এর আলিয়া মৎস্য খামার পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহি অফিসার মোছা. মেরিনা আফরোজ। লোকমান হাকিম সওদাগর বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. মাহবুর রহমান সওদাগর এর পুত্র।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র উপজেলা মৎস্য অফিসার মো. নুর নবী, উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোসা. জান্নাতুল ফেরদৌস, উপজেলা প্রাণীসম্পদ অফিসার ডাঃ মো. মাহবুব হাসান চৌধুরী, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার মো. আব্দুল জব্বার, মৎস্য সম্প্রসারণ অফিসার মোছা. রাইহাতুন নাহার, কাহালু থানার এস আই মহিউদ্দিন প্রমূখ।
উল্লেখ্য যে, লেবাননে অবস্থানে প্রায় ২১ বছরের মধ্যে ৪/৫ বছর মাছচাষে দক্ষতা অর্জন করে বাংলাদেশে ফিরে এসে গত ২০১৯ সালে ৮ম শ্রেণী পাশ করা লোকমান হাকিম সওদাগর কাহালু উপজেলার মালঞ্চা ইউনিয়নের ভালশুন লোহারপাড়া এলাকায় ৩টি পুকুরে শিং মাছচাষ শুরু করেন। শিং মাছচাষে ব্যাপক অর্জন করায়, সেখানে তিনিও আরও নতুন ৭টি পুকুরে শিং মাছচাষ শুরু করেন। সেখানে ছোট পরিসরে একটি মৎস্য খামার ও একটি বাড়ী নির্মাণ করেন। এভাবেই তিনি নিজ পরিবারের লোকজনের প্রেরণায় ১০টি পুকুরে শিং মাছচাষ করে তিনি উন্নতির দিকে ধাবিত হন।
এদিকে তাঁর সফলতায় এগিয়ে আসেন সিনিয়র উপজেলা মৎস্য অফিসার মো. নুর নবী ও উপজেলা মৎস্য অদিদপ্তর। আধুনিক প্রদ্ধতিতে নিরাপদ মাছচাষের জন্য লোকমান হাকিম সওদাগর দেওয়া প্রশিক্ষণ। উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরের কারিগরি সহযোগিতায় লোকমান হাকিম নিজের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে পৌঁছে যান তার স্বপ্নের ঠিকানায়। মাত্র ৩টি পুকুর থেকে নিজস্ব ১০-১২টি পুকুর সহ বর্তমানে বিভিন্ন এলাকায় পুকুর পত্তন নিয়ে ৫৫টি পুকুরে তিনি মাছচাষ করে আসছেন। তিনি প্রতি বছর প্রায় ৮ হাজার মন শিং মাছ উৎপাদন করে দেশের মানুষের আমিষের চাহিদা পুরুণে সহায়ক ভূমিকা পালন করে আসছেন।
উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে শিং মাছচাষে প্রতি বছর লোকমান হাকিম গত ২০২৩ সালে মাছ বিক্রি করেন ১ কোটি ৭ লক্ষ টাকার। ঐ বছর মাছচাষে তার লাভ হয়েছে প্রায় ৪৪ লক্ষ টাকা। এছাড়াও সফল মৎস্যচাষি হিসেবে তিনি দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। সফল মৎস্যচাষী লোকমান হাকিমের ভালশুন লোহারপাড়া গড়ে ওঠা আলিয়া মৎস্য খামারকে এখন অনেক মৎস্যচাষী অনুসরণ করছে। আগে এই অঞ্চলে শিং মাছচাষে অনেকে অনীহা প্রকাশ করলেও বর্তমানে লোকমান হাকিমের সফলতায় এখন এই এলাকার জাকারিয়া, মামুন, বাদল, রেজাউল ও সজিব সহ অনেকেই শিং মাছচাষ করে অনেকটা সফলতার পথে। লোকমান হাকিম জানান, ছোটবেলায় দেখা স্বপ্ন আমার পুরুণ হয়েছে। এখন আমার ইচ্ছা বড় বড় পুকুর নিয়ে মাছচাষের আরও বেশী করে প্রসার ঘটনা। আমার ইচ্ছা অনেক বেকার মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয় সেই চেষ্টায় আছি।
সিনিয়র উপজেলা মৎস্য অফিসার মো. নুর নবী জানান, মাত্র ৪ বছরের ব্যবধানে শিং মাছচাষে লোকমান হাকিম সওদাগর উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছে গেছেন। তাঁর সফলতার গল্প শুনলে অনেক মৎস্যচাষি উপকৃত হবে। বর্তমানে মাছচাষের উপর লোকমান হাকিম সওদাগর জাতীয় পুরস্কার পাওয়ার যোগ্যতা রাখেন।

সম্পর্কিত