লালমনিরহাট প্রতিনিধি:৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে নির্বাচনী বিধিমালা ও সরকারি চাকরি বিধিমালা ভঙ্গ করে লালমনিরহাট-২ আসনের সাংসদ নুরুজ্জামান আহমেদ এর পুত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী রাকিবুজ্জামান আহমেদ এর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা সহ প্রতিপক্ষ প্রার্থী দুবারের সফল চেয়ারম্যান মাহবুবুজ্জামান আহমেদ এর কর্মীদের ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ উঠেছে পাঁচ সরকারী কর্মচারীর বিরুদ্ধে। এরা হলেন-করিম উদ্দিন সরকারি কলেজের প্রভাষক আমিরুল ইসলাম হেলাল, মনিরুল ইসলাম কাঞ্চন, উত্তর বালাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক আবু সাঈদ, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কর্মচারী বিভূতি ভূষণ সবুজ, আদিতমারী উপজেলা সমাজসেবা অফিসের কর্মচারী মামুন হোসেন প্রমুখ।
১৪ ই মে ( মঙ্গলবার) কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহবুবুজ্জামান আহমেদ এ পাঁচজনের বিরুদ্বে রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর একটি অভিযোগ দাখিল করেছেন।
উল্লেখ্য যে, উপজেলা পরিষদ (নির্বাচনী আচরণ) বিধিমালা অনুযায়ী কোনো সরকারি কর্মচারী নির্বাচনপূর্ব সময়ে নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণা বা নির্বাচনী কার্যক্রম করতে পারবেন না। তিনি নির্বাচনী এলাকায় ভোটার হলে শুধু ভোট প্রদান করতে পারবেন।
নির্বাচনী প্রচারণায় আবু সাঈদের অংশ নেওয়ার বিষয়ে স্থানীয়রা বলছেন, উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী রাকিবুজ্জামান আহমেদ ( আনারস) পক্ষে প্রচারণা শুরু করেন। আবু সাঈদ এর বিষয়ে হররাম এলাকার একজন হিন্দু ব্যক্তি বলেন, আবু সাঈদ আমাকে তিনদিন ধরে চাপ সৃস্টি করছে। আমাকে আনারস প্রতিকে কাজ করতে নানা রকম কথাবার্তা বলছেন তিনি।
আদিতমারী উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের কর্মচারী মামুন হোসেনের বিরুদ্ধে গোড়ল ইউনিয়নের বলাইরহাট এলাকার স্থানীয় লোকজন বলেন, সে সরকারী কর্মচারী হয়েও চাকুরী বিধি লংঘন করে আনারস মার্কা নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিচ্ছে এবং স্থানীয় ভোটারদের বলে বেড়াচ্ছেন একটি ভোট হলেও আনারস প্রতীকের বিজয় নিশ্চিত।
কালীগঞ্জ কলেজের প্রভাষক আমিরুল ইসলাম হেলাল এর বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ রয়েছে। তিনি তার নিজ ভোটকেন্দ্র সুন্দ্রাহবি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে বরাবর ভোট প্রভাবিত করতে কাজ করেন। আমিরুল ইসলাম হেলাল সরকারী চাকুরী বিধিমালা ভঙ্গ করে শুধু নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন না , তিনি নিয়ম বহির্ভূতভাবে ক্ষমতার জোরে কালিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি পদ দখলে রাখেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
গত ২ মে প্রতীক বরাদ্দের দিন তিনি সরকারি চাকরির দায়িত্ব পালন না করেই ওই আনারস মার্কার প্রার্থীর সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক সমাবেশে যান। সেই ছবিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও শেয়ার করেন।
সরকারি চাকরি আইন ও নির্বাচনী বিধিমালা লঙ্ঘন করে একজন সরকারি চাকরিজীবীর এমন কর্মকাণ্ডে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন অপর চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মাহবুবুজ্জামান আহমেদ (ঘোড়া)।
মাহবুবুজ্জামান আহমেদ বলেন, ‘এভাবে চলতে পারে না। এটা নির্বাচনের পরিবেশকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। আমি ওই কর্মচারীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।’
জানাগেছে, আনারস মার্কার প্রার্থীর সঙ্গে তাদের আত্মীয়তার ও দলীয় সম্পর্ক রয়েছে। প্রভাষক আমিরুল ইসলাম হেলাল প্রার্থীর চাচা , মনিরুল ইসলাম কাঞ্চন প্রার্থীর একনিষ্ট বন্ধু, আবু সাঈদ কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি কালীগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক, মামুন হোসেন বিগত সময় প্রার্থীর ব্যক্তিগত কর্মচারী ছিলেন ও ছাত্রলীগ কর্মী, বিভূতি ভূষণ সবুজ, বর্তমানে কালিগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন।
সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার জহির ইমাম বলেন, ‘সরকারি চাকরিরত অবস্থায় প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়ার অভিযোগ একনো পাইনি। তিনি বলেন, এ বিষয়ে অতীতে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। এবারেও যদি কারো বিরুদ্বে তথ্য প্রমান সহ অভিযোগ পাওয়া যায় তবে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানান তিনি।