জয়পুরহাট প্রতিনিধি
মেয়াদোত্তীর্ণ সিমেন্ট দিয়ে বিদ্যালয়ের ছাদ ঢালাই
সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রকৌশলী ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান যোগসাজশে নিয়ম না মেনেই বিদ্যালয়ের ছাদ ঢালাই দিয়েছেন।
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার মাত্রাই উচ্চ বিদ্যালয়ে মেয়াদোত্তীর্ণ সিমেন্ট ও নিম্নমানের রড দিয়ে ছাদ ঢালাই দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মাত্রাই উচ্চ বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় তলা বর্ধিতকরণের কাজের অংশ হিসেবে শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তরের অধীনে পঁচাত্তর (৭৫) লক্ষ টাকার কাজ পায় নওগাঁর এশিয়া ক্লিনিক এর স্বত্বাধিকারী নূরুল ইসলাম নামে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজটি পায় তিনি কাজটি না করে কমিশনে প্যারিশ এন্টারপ্রাইজ এর স্বত্বাধিকারী ওবাইদুল্ল্যাকে কাজটি দেন। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ২০১৯ সালের জুলাই থেকে কাজটি শুরু করে আজ রোববার দ্বিতীয় তলার ছাদ ঢালাইয়ের কাজ করা হয়, এদিকে ঢালাইয়ের জন্য রাখা মীর সিমেন্টের ব্যাগের গায়ে উৎপাদন তারিখ জুলাই ২০১৯ ও মেয়াদোত্তীর্ণ তারিখ সেপ্টেম্বর ২০১৯। সিমেন্ট ও রডের গুনগতমান নিম্নমানের দেখে প্রধান শিক্ষকসহ স্থানীয়রা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানালেও তারা কোন কর্ণপাত না করে ওই রড ও সিমেন্ট দিয়েই ছাদ ঢালাই দিয়েছেন।
এদিকে একাধিক ঠিকাদার ও প্রকৌশলীদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, যেহেতু সিমেন্টের মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে সেহেতু ওই সিমেন্টের গুনগতমান নষ্ট হয়ে গেছে, ওই সিমেন্ট দিয়ে কাজ করার পর জমাট বাঁধতে সময় লাগা ছাড়াও এর দীর্ঘমেয়াদীতা কমে যাবে ও নিম্নমানের রডের কারণে কিছুদিন পর ছাদ থেকে সিমেন্ট খন্ড খন্ড হয়ে পড়ে যাবে।
মাত্রাই উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনূল ইসলাম বলেন, নিম্নমানের রড ও সিমেন্টের মেয়াদোত্তীর্ণের ব্যাপারটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা পরও তারা আমার কথা না শুনেই ছাদ ঢালাই দিয়েছে।
ড্রীম বিল্ডিং ডিজাইন ও কনসালটেন্সি সেন্টার এর স্বত্বাধিকারী ইঞ্জিঃ সুলতান মাহমুদ জানান, সিমেন্টের মেয়াদোত্তীর্ণের ফলে এর গুনগতমান নষ্ট হয়ে যায়, এই সিমেন্ট দিয়ে কাজ করলে এর প্রতিক্রিয়া এখন বোঝা না গেলেও কিছুদিন পর এর ফলাফল বোঝা যাবে, সিমেন্ট খসে খসে পড়বে বলে জানান তিনি।
প্যারিশ এন্টারপ্রাইজ এর স্বত্বাধিকারী ওবাইদুল্ল্যা বলেন, সিমেন্টের মেয়াদ উত্তোর্নী হলেও যেহেতু সিমেন্ট দোলা ধরেনি এইজন্যই এই সিমেন্ট দিয়ে কাজ করা হয়েছে, সিমেন্টটি ঢালাইয়ের জন্য কোম্পানী থেকে মেয়াদোত্তীর্ণের আগে নিয়ে আসা হয়েছে, কিন্ত ঈদ ও বৃষ্টির কারণে ঢালাই দিতে না পারায় মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে, এখন ত আর কোম্পানী সিমেন্ট ফেরত নিবে না।
কালাই উপজেলা শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তরের ইঞ্জিঃ শাহাবুদ্দৌলা জানান, ঢালাইয়ের আগে সিমেন্টের প্যাকেট খুলে এর গুনগত মান দেখা হয়েছে, মেয়াদোত্তীর্ণের কারণে সিমেন্টের ভাগ বেশি দিয়ে ঢালাই দেওয়া হয়েছে ফলে কোন সমস্যা হবে না ও রডের গুনগতমান ঠিক আছে বলেও জানান তিনি।
জয়পুরহাট জেলা শিক্ষা অফিসার ইব্রাহীম খলিলুল্লাহ্ বলেন, ব্যাপারটি শুনলাম, ঘটনা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।