শনিবার, ১৭ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৯শে জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি
শনিবার, ১৭ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৯শে জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

একমাসেও শেষ হয়নি রাবি শিক্ষার্থী ফুয়াদের অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্ত প্রতিবেদন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি)ঃ শহীদ শামসুজ্জামান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী খতিব আল ফুয়াদের অস্বাভাবিক মৃত্যুর সঠিক কারণ খতিয়ে দেখতে চার সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল হল প্রশাসন। দশ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা থাকলেও একমাস চারদিন পেরিয়ে গেলেও শেষ হয়নি তদন্ত প্রতিবেদন তৈরির কাজ।

মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন শহীদ শামসুজ্জোহা হলের আবাসিক শিক্ষক ও তদন্ত কমিটির সদস্য ড. মো. ইসমাইল হোসেন।

গত ১২ ডিসেম্বর হলের আবাসিক শিক্ষক অধ্যাপক মো. হুমায়ুন কবিরকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের এ কমিটি গঠন করে হল প্রশাসন। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন আবাসিক শিক্ষক মো. রবিউল ইসলাম, ড. মো. ইসমাইল হোসেন ও কে. এম. মনিরুল ইসলাম।

তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে কমিটির সদস্য ড. মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, তদন্ত কমিটি গঠনের পর আহ্বায়ক কিছুদিন হলে ছিলেন না। তিনি আসার পর আমরা কাজ শুরু করেছিলাম কিন্তু ক্যাম্পাস শীতকালীন ও জাতীয় নির্বাচনের ছুটি থাকায় শিক্ষার্থীরা বাড়িতে চলে যায়। হলে শিক্ষার্থীদের না পেয়ে তদন্ত প্রতিবেদন শেষ করা সম্ভব হয়নি। যার ফলে তদন্ত প্রতিবেদন কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। তবে বন্ধের মধ্যেও আমরা তদন্ত প্রতিবেদনের কাজ কিছুটা এগিয়ে রেখেছি। এখন ক্যাম্পাস খোলা হওয়ায় আবারও তদন্তের কাজ শুরু করেছি এবং দ্রুত প্রতিবেদনের কাজ শেষ হবে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে শামসুজ্জোহা হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মো. একরামুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শীতকালীন ও নির্বাচনের ছুটি থাকায় হয়তো তদন্ত প্রতিবেদনের কাজ শেষ করতে কিছুটা দেরি হচ্ছে। এ বিষয়টি আমার মাথায় আছে। আগামীকাল এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিবো। তবে আমরা এখনো ফরেনসিক রিপোর্ট পায়নি। এ বিষয়ে মতিহার থানার এডিসির সাথে কথা হয়েছে। তারাও জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন যার ফলে এখনো কিছু জানা যায়নি। তবে কিছুদিনের মধ্যেই হল প্রশাসনের তদন্ত প্রতিবেদনের কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে জানান তিনি।

তদন্ত প্রতিবেদন বিলম্ব করায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন মৃত ফুয়াদের পরিবার। এ বিষয়ে ফুয়াদের ভাই মো. আব্দুল ফাত্তাহ্
রাফি বলেন, হল থেকে বলা হয়েছিল দশ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিবে কিন্তু খোঁজ নিয়ে জেনেছি এখনো প্রতিবেদনের কাজ শেষ করেনি প্রশাসন। আমার ভাই হলের মধ্যে রহস্যজনকভাবে মৃত্যু বরণ করেছে এ নিয়ে প্রশাসনের কোনো মাথা ব্যাথা নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায় এমন গাফিলতি মেনে নেওয়ার মতো না। তদন্ত প্রতিবেদন ও ফরেনসিক রিপোর্টের মাধ্যমে আমার ভাইয়ের মৃত্যুর আসল কারণ জানতে চাই আমরা।

উল্লেখ্য, গত ১০ ডিসেম্বর বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুজ্জোহা হলের ১৮৪ নম্বর কক্ষের শিক্ষার্থী ফুয়াদ আল খতিবকে জ্ঞানহীন অবস্থায় উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ নিয়ে যান তার সহপাঠীরা। তবে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ময়নাতদন্ত শেষে গত ১১ ডিসেম্বর তার মরদেহ গাইবান্ধায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে জানাজার নামাজ শেষে জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার নিজ গ্রামে তার মরদেহ দাফন করা হয়। হল থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধারের সময় তার মুখ দিয়ে রক্ত পড়ছিল এবং তার বুকসহ বিভিন্ন স্থানে কালশিটে দাগ ছিল। যা নিয়ে সন্দিহান সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

সম্পর্কিত