সোমবার, ১৭ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩রা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ই রমজান, ১৪৪৬ হিজরি
সোমবার, ১৭ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩রা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ই রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

এই মৌসুমে দিনাজপুরে সর্বোনিম্ন তাপমাত্রা রের্কড

দিনাজপুর প্রতিনিধিঃ মোস্তফা আল মাসুদ,

ঘন কুয়াশা, হিমেল হাওয়া আর হাড় কাঁপানো কনকনে শীতে কাঁপছে দিনাজপুর। বিপর্যস্ত জনজীবন ও প্রাণিকুল। পৌষ মাসের শেষ প্রান্তে হিমালয়ের পাদদেশের সীমান্তঘেঁষা জেলা দিনাজপুরের বাসিন্দাদের জবুথবু অবস্থা।

শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় দিনাজপুরে ৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা এই জেলায় মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।

বৃষ্টির মতো গুঁড়ি গুঁড়ি শিশির পড়ছে। গত তিন দিন ধরে দেখা মিলছে না সূর্যের। দুপুরের পর একটু উঁকি মারলেও নিমিষেই তা নিভে যাচ্ছে। তীব্র শীতের কারণে প্রয়োজন ছাড়া তেমন একটা ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না মানুষজন। সড়কে মানুষের চলাচল কমে যাওয়ায় এবং কাজ না পাওয়ায় রোজগার কমেছে শ্রমজীবী নিম্নআয়ের মানুষের। এতে বিপাকে পড়েছেন তারা। গরম কাপড়ের অভাবে অনেকে খড়কুটো জ্বালিয়ে শরীরে গরম অনুভব করছে।

তীব্র শীতের কারণে কাহিল অবস্থা শিশু ও বয়োবৃদ্ধ মানুষের। শীতজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে তারা। দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেনারেল হাসপাতাল অরবিন্দু শিশু হাসপাতালসহ জেলার বিভিন্ন হাসপাতালগুলোতে শীতজনিত রোগী বেড়েছে। এতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক, নার্স ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

দিনাজপুর জেলা সিভিল সার্জন এএইচএম বোরহানুল ইসলাম সিদ্দিকী জানিয়েছেন, তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় শীতজনিত রোগে আক্রান্তের পরিমাণ অনেক বেড়ে গেছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। এ জন্য শিশু ও বয়স্কদের ঠান্ডা থেকে দূরে রাখাসহ সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।

দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, আজ তাপামাত্রা ৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমেছে। যা জেলায় মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

এদিকে দিনাজপুরের বালুবাড়ির বকুলতলা মোড়ের নরসুন্দর আজগার আলী জানান, প্রচণ্ড শীতে অস্থির আমরা। দোকানে লোক আসছে না, আয় রোজগারও কমে গেছে।

নৈশ্যপ্রহরী জব্বার বলেন, প্রচণ্ড ঠান্ডায় শরীর জমে যাচ্ছে। পর্যাপ্ত কাপড়ের অভাবে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছি।

মোকাদ্দেস হোসেন বাবলু বলেন, জলবায়ুর পরিবর্তনের জন্য এই শীতের দাপট বেড়ে গেছে। এ বছর সবচেয়ে বেশি শীত জেঁকে বসেছে আজ। জীবনযাপন অনেক কষ্টের হয়ে গেছে, গরিব মানুষের অনেক কষ্ট হয়ে গেছে। আমার মনে হয় জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এমন শীত পড়েছে তাই জলবায়ু পরিবর্তনের দিকে নজর দিতে হবে ভারসাম্য করতে হবে, সরকার আমাদের সকলকে জলবায়ু রক্ষার বিষয়ে দৃষ্টি দিতে হবে যাতে পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসতে পারে।

কাজের সন্ধানে আরেক অপেক্ষমাণ নারী নির্মাণশ্রমিক শহরের হঠাৎপাড়া এলাকার সুলতানা বেগম (৪৫) জানায়, ঠান্ডার কারণে ঠিকমতো কাজও করা যায় না। কাজ না করলে টাকা দেবে কে। গরিব মানুষের বাঁচার উপায় নাই। যে তরি-তরকারির দাম, কাছেই যাওয়া যায় না। খাব, না গরম কাপড় কিনব, এই শীতে কেমন করে বাঁচব আল্লাহই জানেন।

সম্পর্কিত