বৃহস্পতিবার, ৩রা অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৮ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩০শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
বৃহস্পতিবার, ৩রা অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৮ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩০শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

উলিপুরে দুই মাস ধরে অবরুদ্ধ বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিবার

উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিবেদক:

কুড়িগ্রামের উলিপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি দখলের জন্য যাতায়াতের রাস্তা প্রাচীর দিয়ে প্রায় দুই মাস ধরে ঘিরে রাখার অভিযোগ উঠেছে। তার পরিবারসহ স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধারা সংবাদ সম্মেলন করে এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন। সোমবার (১১ মার্চ) দুপুরে অবরুদ্ধ বীর মুক্তিযোদ্ধা আইনুল হকের উলিপুর পৌরসভার জোদ্দারপাড়ার বাড়িতে এ সংবাদ সম্মেলন হয়।

 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আইনুল হক বলেন, ছয় দশকের বেশি সময় ধরে তিনি, তার ছোট ভাই আকবর হোসেনসহ সাতটি পরিবার জোদ্দারপাড়া এলাকায় ২৬ শতক জমির ক্রয়সূত্রে মালিক হয়ে বসবাস করে আসছেন। হঠাৎ করে ১৬ জানুয়ারি স্থানীয় রাখিবুল সরদার ও রাশেদ সরদার ২৫-৩০ জন লোক নিয়ে এসে জোরপূর্বক তাদের বাড়ির দুটি গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন।

তিনি বলেন, এরপর তারা টিনের বেড়া দিয়ে আমাদের বসতবাড়ির প্রবেশপথ বন্ধ করে দিয়ে আমাদের অবরুদ্ধ করে ফেলে। তাদের হুমকি-ধমকিতে আমরা নিরুপায় হয়ে ইউএনও, ওসিসহ স্থানীয় প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে প্রতিকার চেয়ে লিখিত অভিযোগ করি। অভিযোগ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে রাখিবুল সরদার, রাশেদ সরদার ও উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রিপা সরদারের নেতৃত্বে ২০ জানুয়ারি অনেক লোক নিয়ে এসে আমাদের পাঁচটি শয়নকক্ষ ও দুটি বাথরুম ভেঙে ফেলে। এ সময় আমাদের পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ২৬ শতক জমির মধ্যে ১০ শতক জমি জবরদখল করে নেয় এবং ইটের প্রাচীর দিয়ে আমাদের যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে সম্পূর্ণরূপে আমাদের অবরুদ্ধ করে রাখে। বর্তমানে আমরা সাতটি পরিবার প্রতিবেশীদের বাড়ির ভেতর দিয়ে যাতায়াত করছি। পরিবারের লোকজনসহ আমরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ায় দুর্বিষহ জীবনযাপন করছি। এ থেকে পরিত্রাণের জন্য প্রশাসনের যথাযথ কর্তৃপক্ষসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আইনুল হকের স্ত্রী তৌহিদা বেগমসহ অবরুদ্ধ পরিবারের সদস্যরা।

এ বিষয়ে রাখিবুল ইসলাম সরদার বলেন, ‘ওই জায়গা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলছে। সেখানে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কার্যালয় ছিল। মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের কাছ থেকে ভাড়া নিয়েছিলেন। কিন্তু পরে তারা ঘর ছাড়তে না চাইলে ১৯৯৩ সালে ভাড়াটিয়া উচ্ছেদের মামলা করি আমরা। দীর্ঘদিন মামলা চলাকালে একাধিকবার রায় পাই আমরা। সেই রায়ের ভিত্তিতে আদালত আমাদের জায়গা বুঝিয়ে দেন। সেই জায়গার ভেতরে তাদের গেট ও বসতঘর থাকায় তা ভেঙে ফেলা হয়েছে।’

অবরুদ্ধ পরিবারগুলোর যাতায়াতের রাস্তার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তারা আমাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছে। মামলার রায় নিয়ে এসে জায়গা বুঝে নিক তারা।’

উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রিপা সরদার বলেন, ‘তারা আমাদের বিরুদ্ধে আদালতে জায়গা জবরদখলের মামলা করেছে। আদালত যে রায় দেবেন আমরা তা মেনে নেব।’

উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম মর্তুজা বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আতাউর রহমান অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘যেহেতু বিষয়টি জনগুরুত্বপূর্ণ, তাই দ্রুতই দুই পক্ষকে নিয়ে বসে মীমাংসার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

সম্পর্কিত