পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি:পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার পামুলি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি বাবু মনিভূষন রায় এবং সাবেক মহিলা ইউপি সদস্য মোছা রাশেদা বেগম (আগুনপাখি) উভয়ের পরকীয়া প্রেম এবং অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িত থাকায় শাস্তির দাবীতে রবিবার (২ জুন) দেবীগঞ্জ-বোদা মহাসড়কের লক্ষীরহাট চৌরাস্তায় বিকাল ৪ টা থেকে ৬ টা পর্যন্ত মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।
উক্ত মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী বক্তারা বলেন, “জনপ্রতিনিধি সমাজের দায়িত্বশীল ব্যাক্তি, দায়িত্বশীল ব্যাক্তি যদি নিজেই অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িত থাকেন তাহলে এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কিছু নেই। একজন চেয়ারম্যান এর এমন জঘন্যতম অনৈতিক কর্মকান্ড প্রকাশিত হওয়ায় সমাজের সাধারণ মানুষের মাঝে তীব্র ক্ষোভের প্রকাশ পেয়েছে। ‘আমরা জনসাধারণ এই চেয়ারম্যান কে অব্যাহতি এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে মানববন্ধনে অংশ গ্রহণ করেছি।”
মানববন্ধনে ভুক্তভোগী আবু সাঈদ জানান, “রাশেদা ওরফে আগুনপাখি তার বিবাহিত স্ত্রী তাদের দুইটি সন্তান আছে। সন্তানদের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে স্বামী আবু সাঈদ দেশের বাইরে গিয়ে কাজ করে স্ত্রীর হিসাব নম্বরে টাকা পাঠান। একপর্যায়ে স্থানীয় বিভিন্ন লোকজনদের নিকট সাঈদ জানতে পারেন তার স্ত্রী পামুলি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মনিভূষন রায়ের সাথে পরকিয়াতে আসক্ত। বিদেশে চার বছর থেকে দেশে আসার পরে সাঈদ উপার্জনকৃত পাঠানো টাকার হিসাব চাইলে স্ত্রী রাশেদা হিসাব দিতে বিভিন্ন তালবাহানা করে। পরবর্তীতে চেয়ারম্যান এর সঙ্গে পরকীয়া এবং কিছু টাকা চেয়ারম্যানকে দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে ক্ষমা চায়। সাঈদ তার সামাজিক মানসম্মান এবং সন্তানদের কথা চিন্তা করে তার স্ত্রী কে ক্ষমা করে। এর পরে সাঈদ ঢাকায় চাকুরি করতে যাওয়ার আনুমানিক ১০ মাস পর বাড়িতে আসার পরে দেখতে পায় তার স্ত্রী এবং চেয়ারম্যান এর মধ্যে পরকীয়া প্রেম চলমান আছে, প্রায় সময় রাতে মনিভূষন রায় বাড়িতে আসে এবং তারা দুইজন একসঙ্গে ভারত ভ্রমণে গিয়েছিল। চেয়ারম্যানকে এ বিষয়ে বাঁধা দিলে চেয়ারম্যান উল্টো আবু সাঈদ কে বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়। প্রায় এক বছর ধরে সাঈদ ও তার স্ত্রীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক না হলেও সে বর্তমানে ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা’। সাঈদ আরো বলেন তার স্ত্রী চেয়ারম্যানের সাথে যে পরকীয়া করে এলাকায় গেলে শত শত মানুষ সাক্ষী দিবে। পরকীয়া প্রেমের প্রতিবাদ করার কারনে সাঈদ কে উল্টো বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন অভিযুক্ত চেয়ারম্যান এবং তার স্ত্রী। সাঈদ দেশের বাইরে এবং ঢাকায় থাকা কালীন সময়ে যে টাকা পাঠিয়েছিলেন সে টাকা দিয়ে সাঈদের নামে জমি ক্রয়ের কথা থাকলেও নিজের নামে ক্রয় করেছেন পরকীয়া প্রেমিকা আগুনপাখি। সাঈদ জানান ‘এখন আমি নি:স্ব। আমার স্ত্রী সংশোধন না হয়ে চেয়ারম্যান এর প্ররোচনায় উল্টো আমাকে বাড়িতে প্রবেশ করতে দেয় না। এ বিষয়ে দেবীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দেওয়ার পর থেকে আমাকে এবং যারা আমার স্ত্রী ও চেয়ারম্যান এর পরকীয়া সম্পর্কে বাঁধা প্রদান করেছিলেন সবাইকো মিথ্যা বানোয়াট মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দিয়ে আসছে “।
এ বিষয়ে মোছা রাশেদা বেগম ওরফে আগুনপাখির মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি নন বলে জানান।
পামুলি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মনিভূষন রায় এর সঙ্গে একাধিক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তার মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয় নি।
দেবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ সরকার ইফতেখারুল মোকাদ্দেম বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।